পুরুষ ও স্ত্রী চিংড়ির পার্থক্য

পুরুষ চিংড়ি: পুরুষ চিংড়ির বৃদ্ধি স্ত্রী চিংড়ির চেয়ে বেশী। শিরোবক্ষ মোটা ও আকারে বড়ো হয়। নিম্নোদর অপেক্ষাকৃত সরু দেখায়। আর একটি বৈশিষ্ট্য হল পুরুষ চিংড়ির মোটা লম্বা দাঁড়া বিশিষ্ট দ্বিতীয় ভ্রমনপদ। অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তরনপদের ভেতরের দিকের পদের (ENDOPODITE) গোড়ায় সংলগ্ন লোমশ এপেন্ডিকস ম্যাসকুলিনা দেখা যায়। এছাড়া প্রথম উদর খন্ডের তলার খোলসের মাঝখানে একটা ছোট শক্ত কাঁটার মত দেখা যায়। জুভেনাইল অবস্হায় একমাত্র এপেন্ডিকস ম্যাসকুলিনা দেখেই করতে হয়। কারন তখন অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যায় না।
স্ত্রী চিংড়ি : স্ত্রীচিংড়ি মাথা ও দ্বিতীয় বাহু অপেক্ষাকৃত অনেকটা ছোট থাকে এবং নিম্নোদরের নীচের দিকে ডিম ধারনের জন্য নিম্নোদর অপেক্ষাকৃত চওড়া হয়। পিঠের খোলস বড় হয় এবং উভয় দিকে নেমে এসে ডিমগুলি ঢেকে রাখতে সাহায্য করে।

চিংড়ি (গলদা) : পোষ্ট লার্ভা বা ধানী অবস্হায় পৌঁছাতে প্রায় ৩০-৪০ দিন সময় লাগে। এই সময়ে এরা ১১ বার খোলস ছাড়ে। প্রতিবারে খোলস ছাড়ার পর এদের কিছুটা রুপান্তর ঘটে। পোষ্ট লার্ভা অবস্হায় এরা ৩ সে.মি. আকারের বড়ো হয়। ২-৩ মাস বয়সে যখন ৬-৭ সে.মি. মাপে পৌঁছায় তখন সাব অডান্ট অবস্হায় পৌঁছায়।

বাগদা চিংড়ির স্ত্রী-পুরুষের পার্থক্য ( চেনার উপায়)।

পুরুষ ও স্ত্রী চিংড়ির পার্থক্য


বাগদা চিংড়ির স্ত্রী-পুরুষ চেনা বা সনাক্ত করা গলদা চিংড়ি থেকে অনেক অনেক সহজ।
১। পুরুষ বাগদা চিংড়ির প্রথম সন্তরণপদ বা সাতার কাঁটার পায়ে ছোট দূটি দন্ডের মত জিনিস থাকে। একে পুরুষের অপ্রধান যৌনাঙ্গ পেটাসমা বলে। যাদের পেটাসমা থাকবে তারা পুরুষ, যাদের থাকবে না তারা স্ত্রী। জুভেনাইল অবস্থায়ও পেটাসমা থাকে।
২। স্ত্রী চিংড়ির ৩য় থেকে ৫ম জোড়া পায়ের মধ্যবর্তী স্থানে বা বুকে স্ত্রীর অপ্রধান যৌনাঙ্গ থেলিকাম থাকবে। যাদের থেলিকাম থাকবে না তারা পুরুষ। জুভেনাইল অবস্থায়ও থেলিকাম থাকবে।
৩। পুরুষের ৫ম জোড়া চলনপদ বা পায়ের গোড়ায় পুংজননেন্দ্রিয়ের ছিদ্র থাকে।
৪। স্ত্রী চিংড়ির ৩য় জোড়া চলনপদ বা পায়ের গোড়ায় স্ত্রীজননেন্দ্রিয়ের ছিদ্র থাকে।
৫। একই বয়সের স্ত্রী অপেক্ষা পুরুষ অনেক ছোট হয়। তাই যে কোন খামার থেকে ও ট্রলারের মাধ্যমে একই সময়ে আহরিত চিংড়ির মধ্যে ছোটগুলো সাধারণত পুরুষ এবং বড়গুলো স্ত্রী হয়ে থাকে।
**বাগদা চিংড়ির স্ত্রী-পুরুষ চেনার উত্তম পদ্ধতি হল পেটাসমা ও থেলিকাম দেখা। পেটাসমা থাকলে নিশ্চিত পুরুষ, না থাকলে স্ত্রী এবং থেলিকাম থাকলে নিশ্চিত স্ত্রী, না থাকলে পুরুষ চিংড়ি।
বাগদা চিংড়ি হ্যাচারি কর্মীদের ট্রলার থেকে মাদার চিংড়ি নির্বাচন করতে স্ত্রী-পুরুষ চেনা জরুরী প্রয়োজন। এস.পি. এফ. হ্যাচারি পরিচালনার কর্মীদের অবশ্যই সহজে স্ত্রী-পুরুষ চিনতে হবে।