পাড়ায় তাহার রূপের প্রশংসা ছিল, কিন্তু বর্বর বালকের চক্ষে সে সৌন্দর্যের কোন গৌরব ছিল না।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : আলোচ্য অংশটুকু বাংলা ছোটগল্পের জনক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিরচিত ‘একরাত্রি’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়িত হয়েছে।
প্রসঙ্গ : সুরবালার রূপ-সৌন্দর্য সম্পর্কে নায়কের নিস্পৃহ মনোভাব এবং উদাসীনতা এখানে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে নায়কের নিজ জবানিতে।
বিশ্লেষণ : সুরবালা ছিল নায়কের প্রতিবেশী এবং বাল্যসখী। তারা একত্রে পাঠশালায় যেত এবং অবসরে বউ বউ খেলত। সুরবালাদের বাড়িতে নায়কের অবাধ যাতায়াত ছিল। সেখানে সে বিশেষ আদর ও যত্ন পেত। সুরবালার দুটিকে একত্র করে আপনা-আপনি বলাবলি করতেন, “আহা দুটিতে বেশ মানায়।” নায়ক বালক হলেও একথাটির অর্থ বুঝত। সুরবালার প্রতি অন্যের চেয়ে তাঁর অধিকারের মাত্রা বেশি এ ধারণা তার মনে বদ্ধমূল হয়ে গিয়েছিল। এজন্য সে অধিকারমদে মত্ত হয়ে সুরবালার প্রতি শাসন। এবং উপদ্রব উভয়ই চালাত। সুরবালাও তা নির্বিবাদে মেনে নিত। নায়কের সকল রকম ফরমাশ খাটতে সে সব সময় আগ্রহী ছিল। সুরবালার আরেকটি বিশেষত্ব ছিল সে রূপবতী। পাড়ায় তার রূপের বিশেষ প্রশংসা ছিল। কিন্তু নায়কের এ বিষয়ে কোন মনোযোগ ছিল না। সে শুধু জানত সুরবালা শুধু তারই প্রভুত্ব স্বীকার করবার জন্য পিতৃগৃহে জন্মগ্রহণ করেছে। অধিকার মত্ততায় সুরবালার কোন গুণই নায়কের মনে স্থায়ীরূপ লাভ করেনি।
মন্তব্য: যা খুব সহজে লাভ করা যায় তার অন্তর্নিহিত গুণ অনেক সময় উপেক্ষিত থেকে যায়।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a7%80%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a8/