উত্তর : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘প্রাগৈতিহাসিক’ গল্পে নারীসঙ্গবিহীন জীবন তার কাছে নিরুৎসব এবং নিরুত্তাপ মনে হয়। বাজারে ঢোকার মুখেই পাঁচী নামে আরেকজন ভিখারিনী ভিক্ষা করতে বসে। তার বয়স বেশি নয়, দেহের বাঁধুনিও শক্ত কিন্তু হাটুর নিচ থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত থকথকে ঘা। এই ঘায়ের জোরে সে ভিখুর থেকে বেশি উপার্জন করে। সে-জন্য সে বিশেষ যত্নে ঘাটিকে সারতে দেয় না। ভিখু আজীবন তাকে সুখে রাখবার প্রতিজ্ঞা করে বিয়ে করতে চায় এবং আরও বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখায়। কিন্তু ভিখু তাকে ওষুধ দিয়ে পায়ের ঘাটি সারানোর জন্যে বলে। কিন্তু পাঁচী তাতে রাজি হয় না এই কারণ দেখিয়ে যে দুদিন পরে ভিখু তাকে তাড়িয়ে দিতে পারে, আর ঘাটি সেরে গেলে তখন তাকে আবার ভিক্ষা করতে হবে। কিন্তু ঘাটি না থাকলে তাকে আর কেউ ভিক্ষা দেবে না। আর এই কারণেই পাঁচী ঘাটি সারতে চায় নি । সুতরাং, সার্বিক আলোচনা থেকে বলা যায় যে, পাঁচী তার ভবিষ্যৎ চিন্তা করেই ঘাটি সারতে চায় নি, কারণ তাদের শ্রেণির মানুষগুলোর কাছে সংসার চিন্তা অপেক্ষা আর্থিক চিন্তাই বড় হয়ে দেখা দেয়।