অথবা, পরীক্ষণ পদ্ধতি কাকে বলে?
অথবা, পরীক্ষণ পদ্ধতির সংজ্ঞা দাও।
অথবা, পরীক্ষণ পদ্ধতি কী?
উত্তর।। ভূমিকা : প্রতিটি বিজ্ঞানই তার বিষয়বস্তু আলোচনা করার জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে।বিজ্ঞান হিসেবে মনোবিজ্ঞানও এর ব্যতিক্রম নয়। আচরণ সম্পৰ্কীয় বিজ্ঞান হিসেবে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর আচরণের বিভিন্ন দিক সম্বন্ধে উপাত্ত সংগ্রহের জন্য মনোবিজ্ঞান যে কয়টি পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে, তার মধ্যে পরীক্ষণ পদ্ধতিটি অন্যতম।
পরীক্ষণ পদ্ধতি।কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়ে নিয়ন্ত্রণাধীন অবস্থায় কোন মানসিক প্রক্রিয়াকে নিরীক্ষণ করার যে প্রণালী তাকে পরীক্ষণ পদ্ধতি বলে। অর্থাৎ, কোন বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে বিশেষ কৃত্রিম পরিবেশ সৃষ্টি করে কোন
মানসিক প্রক্রিয়াকে পর্যবেক্ষণ করার যে পদ্ধতি তাকে পরীক্ষণ পদ্ধতি বলা হয়। বিভিন্ন প্রকার জটিল প্রশ্নের সমাধানের জন্য পরীক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
Wayne Weiten এর মতে, “পরীক্ষণ হল এমন একটি গবেষণা পদ্ধতি যেখানে অনুসন্ধানকারী সুনিয়ন্ত্রিত পরিবেশে একটি চল প্রয়োগ করেন এবং তার ফলে দ্বিতীয় চলে কোন পরিবর্তন আসে কি না তা পর্যবেক্ষণ করেন।”
Barry F, Anderson বলেছেন, “পরীক্ষণ হল এমন একটি অবস্থা যেখানে কেউ দু’টি চলের মধ্যকার সম্পর্ক নির্ণয়ের জন্য একটির মধ্যে ইচ্ছাকৃত পরিবর্তন এনে দেখেন এর ফলে অন্যটির মধ্যে কোন পরিবর্তন সাধিত হয় কি না”
William Buskist এবং David W. gerbing বলেছেন, “পরীক্ষণ হল একটি গবেষণা পদ্ধতি যেখানে অনুসন্ধানকারী কতকগুলো নির্দিষ্ট চল প্রয়োগ করেন এবং অন্যান্য চলের উপর তাদের প্রভাব পরিমাপ করেন।”
মনোবিজ্ঞানী কেস্ট এর মতে, “পরীক্ষণ হল বৈজ্ঞানিক গবেষণাগারে ব্যবহৃত একটি বিশুদ্ধ পদ্ধতি যার দ্বারা উপাদানসমূহ ইচ্ছামতো পরিবর্তন করা যায় এবং পর্যবেক্ষণকৃত ফলাফল নিয়ন্ত্রণ করা যায়।”
পরীক্ষণ পদ্ধতিতে সুব্যবস্থিত ও সুপরিকল্পিত অবস্থায় সুনিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পরীক্ষণ পাত্রের উপর উদ্দীপকের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে গবেষণা করা হয়। যে অনুসন্ধান কার্যে উদ্দীপকের প্রভাবের উপর অনুসন্ধানকারীর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা থাকে তাকে পরীক্ষণ বলা যায়। অতএব, পরীক্ষণকার্য সাধারণত গবেষণাগারের নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের ভিতর পরিচালনা করা হয়ে থাকে। তবে অনুরূপ পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে গবেষণাগারের বাইরেও পরীক্ষণ কার্য পরিচালনা করা যেতে পারে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, যে কোন পদ্ধতির প্রধান অবলম্বনই হল নির্ভরযোগ্য গবেষণা পদ্ধতি। পরীক্ষণ পদ্ধতি এ শর্ত পূরণ করে। সেজন্য পরীক্ষণ পদ্ধতিকে সকল পদ্ধতির শ্রেষ্ঠতম পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পরীক্ষণ পদ্ধতি
আবিষ্কারের ফলেই মনোবিজ্ঞান আজ পূর্ণ বৈজ্ঞানিক মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত।


