পরীক্ষণে কার্য-কারণ সম্বন্ধের স্বরূপ ও সম্পর্ক নির্ণায়ক শর্তাবলি লিখ।

অথবা, পরীক্ষণে কার্য-কারণ সম্বন্ধের স্বরূপ ও সম্পর্ক নির্ণায়ক শর্তাবলি উল্লেখ কর।
অথবা, পরীক্ষণে কার্য-কারণ সম্বন্ধের স্বরূপ ও সম্পর্ক নির্ণায়ক শর্তগুলো লিখ।
অথবা, পরীক্ষণে কার্য-কারণ সম্বন্ধের স্বরূপ ও সম্পর্ক নির্ণায়ক শর্তগুলো কী কী?
উত্তর৷ ভূমিকা : প্রত্যেক বিজ্ঞানেই নিজস্ব বিষয়বস্তুর আঙ্গিকে তার অনুধ্যান বা গবেষণা পদ্ধতি নির্ভর করে।মনোবিজ্ঞান মানুষের আচরণ নিয়ে কাজ করে এবং এ আচরণের ধরনে রয়েছে ব্যাপকতা। তাই মনোবিজ্ঞানে ব্যবহৃত পদ্ধতিসমূহেও রয়েছে ভিন্নতা ও ব্যাপকতা। এক্ষেত্রে কেবল একটি মাত্র পদ্ধতি ব্যবহার করে অনুধ্যান পরিচালনা সম্ভব নয়। এছাড়াও নতুন নতুন গবেষণা পদ্ধতির অনুসন্ধান ও তার প্রয়োগে মনোবিজ্ঞানীগণ সর্বদা সচেষ্ট।
পরীক্ষণে কার্য-কারণ সম্বন্ধের স্বরূপ ও সম্পর্ক নির্ণায়ক শর্তাবলি : নিম্নে পরীক্ষণে কার্য-কারণ সম্বন্ধের স্বরূপ ও সম্পর্ক নির্ণায়ক শর্তাবলি আলোচনা করা হলো-
ক. আবশ্যকীয় শর্ত : এটি এমন একটি শর্ত, যা নির্দিষ্ট ঘটনা ঘটালে সেখানে অবশ্যম্ভাবীরূপে উপস্থিত থাকে।
যেমন- শ্রমিকরা শ্রমিক অসন্তোষের একটি আবশ্যকীয় শর্ত। এখানে শ্রম অসন্তোষ কখনোই দেখা দিবে না যদি সেখানে শ্রমিকরা উপস্থিত না থাকে।
খ. পর্যাপ্ত শর্ত : এটি এমন একটি শর্তকে বুঝায় যা একটি নির্দিষ্ট ঘটনা ঘটাতে সক্ষম। যেমন- বাস্তবে অপটিক নার্ভ নষ্ট হয়ে গেলে অবশ্যই অন্ধত্ব ঘটবে।
গ. সহায়ক শর্ত : এটি এমন একটি শর্ত, যা কোন একটি ঘটনা ঘটাতে যে শর্তের দরকার হয় তাকে সাহায্য করে।যেমন- কৈশোরে পরিবারের পিতার দৈহিক অনুপস্থিতি সন্তানের মাঝে মাদকাশক্তি সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ঘ. আকস্মিক শর্ত : এটি এমন একটি বিষয়, যা কোন চলককে সহায়ক শর্ত হিসেবে বিবেচিত হতে সাহায্য করে।যেমন- অনেক সময় দেখা যায় যে, কৈশোরে পরিবারে পিতার দৈহিক অনুপস্থিতির ফলে সন্তানের মাঝে মাদকাসক্তি দেখা দেয় না যদি না তার সঙ্গীরা ব্যাপক হারে নেশাদ্রব্য ব্যবহার করে। এখানে সঙ্গীদের আচরণ একটি আকস্মিক শর্ত।
ঙ. বিকল্প শর্ত : এটি হচ্ছে এমন সব অবস্থা, যা সম্মিলিতভাবে ঘটনা ঘটাতে সহায়তা করে। যেমন- উপরের উদাহরণে কৈশোরে পরিবারে পিতার দৈহিক অনুপস্থিতি অথবা শিশুর প্রতি পিতার অস্বাভাবিক আচরণ উভয়েই সন্তানের
মাদকাসক্তির ক্ষেত্রে সহায়তা করে থাকে। এসব শর্তই বিকল্প শর্ত হিসেবে বিবেচিত।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য বিষয়। পরীক্ষণকে অনেক সময় ‘Controlled laboratory study’ হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। “নিয়ন্ত্রণ’ হচ্ছে পরীক্ষণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিবেচ্য এবং এ নিয়ন্ত্রণ হতে হবে অবশ্যই পরিকল্পিতভাবে। তাই পরীক্ষণে কার্য-কারণ সম্বন্ধের স্বরূপ ও সম্পর্ক নির্ণায়ক শর্তাবলির গুরুত্ব মনোবিজ্ঞানে অস্বীকার করা যায় না।