অথবা, ন্যায় ষোড়শ পদার্থগুলো কী কী?
অথবা, নৈয়ায়িক ষোড়শ পদার্থগুলো কী কী?
উত্তর৷ ভূমিকা : ন্যায়দর্শন আস্তিক বস্তুবাদী দর্শন। মহর্ষি গৌতম ন্যায়দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি আবার অক্ষপাদ নামেও পরিচিত। তার নামানুসারে তার দর্শনকে অক্ষপাদ দর্শনও বলা হয়। গৌতমের ‘ন্যায়সূত্র’ ন্যায়দর্শনের প্রথম রচনা হিসেবে স্বীকৃত। ন্যায়দর্শন প্রধানত যথার্থ জ্ঞান লাভের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করে। কি উপায়ে বা কোন কোন বিধি অনুসরণ করে যুক্তিতর্ক করলে আমরা যথাযথ জ্ঞান লাভ করতে পারি ন্যায়দর্শন প্রধানত তারই আলোচনা করে। এ কারণে ন্যায়দর্শনকে ‘তর্ক শাস্ত্র’ বা বাদবিদ্যাও বলা হয়। ন্যায়দর্শনের আলোচ্যবিষয়কে চারভাগে ভাগ করা যায় । যথা : ক. জ্ঞানতত্ত্ব; খ. জগত্তত্ত্ব; গ. জীবাত্মার স্বরূপ ও মুক্তিতত্ত্ব এবং ঘ. ঈশ্বরতত্ত্ব। ন্যায়দর্শনে ষোড়শ পদার্থের আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ন্যায়দর্শনের ষোড়শ পদার্থ : পদের অর্থের নাম পদার্থ (পদস্য অর্থ : পদার্থঃ)। অর্থাৎ কোন পদ দ্বারা যে অর্থ নির্দিষ্ট হয় তাই পদার্থ। পদার্থসমূহের তত্ত্বজ্ঞান ও জীবের মুক্তিলাভের জন্য একান্ত প্রয়োজন। ন্যায়দর্শনের মতে, পদার্থ ষোলো প্রকার । যথা : ১. প্রমাণ, ২. প্রমেয়, ৩. সংশয়, ৪. প্রয়োজন, ৫. দৃষ্টান্ত, ৬. সিদ্ধান্ত, ৭. অবয়ব, ৮. তর্ক, ৯. নির্ণয়, ১০. বাদ, ১১. জল্প, ১২. বিতন্ডা, ১৩. হেত্বাভাস, ১৪. ছল, ১৫. জাতি এবং ১৬. নিগ্রহস্থান।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ন্যায়দর্শনের ষোলোটি পদার্থের আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নৈয়ায়িকেরা এ ষোড়শ পদার্থকে তাদের আলোচনার মূল স্তম্ভ মনে করেন। কারণ জীবকে ষোলোটি পদার্থের তত্ত্বজ্ঞান প্রদান করা ন্যায়দর্শনের অন্যতম উদ্দেশ্য।