নিষিদ্ধ বস্তু সাধারণত ভীতি ও আকর্ষণ এ দুই মনোবৃত্তির সংঘর্ষ বাধিয়ে জীবনের বিচ্যুতি ঘটায়।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক মোতাহের হোসেন চৌধুরী বিরচিত ‘সংস্কৃতি কথা’ প্রবন্ধের অন্তর্গত।
প্রসঙ্গ : যা নিষিদ্ধ তা মানুষের মনোজগতে যে সকল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করা হয়েছে।
বিশ্লেষণ : ধর্ম ও সংস্কৃতি মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রিত করে। ধর্মের সাথে সংস্কৃতির তেমন কোন সম্পর্ক নেই। ইন্দ্রিয়ের সাধনা বলে থাকে সংস্কৃতির কেন্দ্রে রয়েছে নারী। কিন্তু কোন কোন ধর্মে নারীর মূল্যায়ন বিষ সদৃশ। তারা মনে করে নারী নরকের দ্বার। তবে সব ধর্মে এমন উগ্র নারীবিদ্বেষ ছড়ানো হয়নি। কিছু ধর্মে নারীকে যথেষ্ট মর্যাদাও দেয়া হয়েছে। তবে সঙ্গীত ও নৃত্যের মধ্য দিয়ে নারীকে ঘিরে যে মায়ার ইন্দ্রজাল সৃষ্টি হয় তাতে ঘোর আপত্তি সকল ধর্মেরই। প্রকৃতপক্ষে এসব শিল্পচর্চায় যে কামের উন্নয়ন এবং সূক্ষ্ম সৌন্দর্যবোধের প্রকাশ তা এ সকল ধর্ম উপলব্ধি করতে পারেনি। ফলে সূক্ষ্ম উপভোগের সহায়ক না হয়ে নারী হয়ে রইল স্থুল ভোগের বস্তু। যে নারী হতে পারত মানবসভ্যতার সব অগ্রযাত্রায় সমান অংশভাগী ও প্রেরণাদাত্রী, সংকীর্ণতার কারণেই সে তা হতে পারল না। নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তির উৎস ও উচ্চতর জীবনের সহায় না হয়ে নারীকে বন্দী থাকতে হলো যৌনতার মধ্যে। নৈতিক স্বাস্থ্যরক্ষার তাগিদে নীতিবিদরা যৌন ব্যাপারে খুব কড়া নীতি অবলম্বন করলেন এবং কোথাও কোথাও তাকে নিষিদ্ধও হতে হলো। তবে মানুষের স্বভাব এ যে, নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি তার ভীতি ও আকর্ষণ সমান। ফলে ভীতি ও কর্ষণের মধ্যে বেঁধে যায় সংঘর্ষ। আর এর ফলে বিচ্যুতি ঘটে মানুষের। এ বিচ্যুতি দেখা গিয়েছে যৌনতা তথা নারী সম্ভোগের ক্ষেত্রে। যৌনতাকে মন্দ না বলে যদি প্রেম, আনন্দ, নারী এ সকলই ভালো এবং এ সকলকে ভোগ না করে উপভোগ কর বলা হতো তবে মানুষের জীবনে কামনা ও নারী সহজ-সুন্দর হয়ে উঠত।
মন্তব্য : অকারণে কোনকিছু নিষিদ্ধ করা হলে তার প্রতি মানুষের আকর্ষণ বৃদ্ধি পায় ।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%95%e0%a6%a5%e0%a6%be-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%a4/