অথবা, ইখতিয়ার বলতে কী বুঝ?
অথবা, নির্বাচন কী?
অথবা, নির্বাচন কাকে বলে?
অথবা, ইখতিয়ার কাকে বলে?
উত্তর৷ ভূমিকা : বিশিষ্ট ধর্মতাত্ত্বিক ও আইনবেত্তা আহমদ বিন হাম্বল ও আব্বাসীয় খলিফা আল মুতাওয়াক্কিল নয় শতকের মাঝামাঝি সময়ে আল মামুনের মুতাজিলাপন্থি নীতি পাল্টে দেয়ার জন্য কঠোর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু আশারিয়ারা এ দমননীতি মুতাজিলাদের বুদ্ধিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ও ধর্মতাত্ত্বিক প্রভাব একেবারে ধ্বংস করে দিতে পারে নি।
তাই ধর্মের সমর্থনে আশারিয়াদের ‘মুতাকাল্লিমুন’ও বলা হয়।
নির্বাচন বা ইখতিয়ার : আশাবিয়রা মনে করেন, মানুষ কোন কিছু সৃষ্টি করতে পারে না। তাদের মতে, সৃষ্টি একমাত্র আল্লাহই করতে পারেন। কেননা তিনি সর্বশক্তিমান। তিনি কর্ম সম্পন্ন করার জন্য মানুষের মধ্যে শক্তি ও সামর্থ্য সৃষ্টি করেন । তিনি ভালো ও মন্দ দুটি বিকল্পের মধ্যে মুক্ত নির্বাচনের ইখতিয়ার বা ইচ্ছাশক্তি মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন।
তবে শুধু মানুষই এ মুক্ত নির্বাচন কাজ উৎপন্ন করার জন্য যথেষ্ট নয়, বরং আল্লাহর প্রকৃতিই মানুষের মধ্যে স্বয়ং তার দ্বারা সৃষ্ট নির্বাচন ও শক্তি অনুসারে কর্ম উৎপন্ন করে। এভাবে প্রবর্তন বা সম্পন্নকরণ আল্লাহ কর্তৃক সৃষ্ট হয়। আল্লাহ্ কর্মের ইচ্ছা ও শক্তি সৃষ্টি করেন বলে আশাবিয়রা মত দেন। মানুষের মধ্যে সৃষ্ট ইচ্ছা ও শক্তির জন্য মানুষ তার কর্মের গুণ বা
দোষ অর্জন করতে পারে। যেমন- আল্লাহ্ লেখার বা বলার অভিপ্রায় সৃষ্টি করে। এরপর তিনি মানুষের মধ্যে শক্তি ও নির্বাচন সৃষ্টি করেন এবং পরে সৃষ্টি করেন কর্ম। কর্ম আল্লাহ্ কর্তৃক সৃষ্ট এবং মানুষ তার কর্মের কর্তা হিসেবে এটি অর্জন করে। এভাবে আশারিয়া মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতাও দায়িত্বের বিবরণ দেন। আর কাদারিয়া ও মুতাজিলাদের ইচ্ছার
স্বাধীনতাবাদী মত এবং সনাতনপন্থি। মুসলমানদের ও জাবারিয়া সম্প্রদায়ের অদৃষ্টবাদি মতের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য
মধ্য পথ অবলম্বন করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আশারিয়ারা মানুষের সীমিত স্বাধীনতা সম্পর্কে স্বীকৃতি দেন। তাদের মতে, মানুষ কাজকে সৃষ্টি করতে পারে না, আল্লাহ্ কাজকে সৃষ্টি করেন। তবে বিকল্পগুলোর মধ্যে কোন কাজটি মানুষ করবে তা নির্বাচনের শক্তি আল্লাহ্ মানুষের মধ্যে দিয়েছেন।