অথবা, নির্বাচকমণ্ডলীকে সরকারের চতুর্থ অগ করার কারণসমূহ উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : আধুনিক রাষ্ট্রে নির্বাচকমণ্ডলীর গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। নির্বাচকমণ্ডলীর গুরুত্ব বিচারে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে একে সরকারের চতুর্থ অঙ্গ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। সরকারের তিনটি বিভাগ যেমন সরকার পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণে স্বতন্ত্রও বিশেষ ভূমিকা পালন করে তেমনি নির্বাচকমণ্ডলী ও অসামান্য দায়িত্ব পালন করে থাকে।
নির্বাচকমণ্ডলীকে সরকারের চতুর্থ অঙ্গ বলার কারণ : যেসব গুরুত্বপূর্ণ কারণে নির্বাচকমণ্ডলীকে সরকারের চতুর্থ অঙ্গ বলা হয় তা নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।
১. আইন প্রণয়ন না নীতিনির্ধারণ নির্বাচনী আইনসভার সদস্যদের নির্বাচন করে থাকে। আইনসভার জনগণের জন্য কল্যাণকর আইন প্রণয়নের সময় নির্বাচকমণ্ডলী আইনসভার সদস্যদেরকে প্রভাবিত করতে পারে। এছাড়া সরকারের নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে নির্বাচক ও পরোক্ষনে অংশগ্রহণ করে থাকে।
২. জনমত গঠন : সরকার যদি জনগণের স্বার্থবিরোধী কোন কাজ করে বা সরকার যদি স্বৈরাচারী হয়ে উঠে তাহলে নির্বাচকমণ্ডলী সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করে এর পতন ঘটায়।
৩. জাতীয় সমস্যার সমাধান : রাষ্ট্রে জাতীয় সমস্যার সৃষ্টি হলে সে মুহূর্তে নির্বাচকমণ্ডলী সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এমনকি ঐ সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারকে চাপ দেয়।
৪. প্রতিনিধিত্বশীল শাসনব্যবস্থা : প্রতিনিধিত্বশীল শাসনব্যবস্থায় নির্বাচকমণ্ডলী কেবল সরকারের প্রকৃতিই নির্ধারণ করে না, বরং সরকারের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনা করে থাকে। তাই একে সরকারের চতুর্থ অঙ্গ বলা হয়ে থাকে।
৫. রাজনৈতিক দলের উপর প্রভাব : নির্বাচকমণ্ডলী রাজনৈতিক দলের উপরও প্রভাব এবং নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে থাকে। নির্বাচকমণ্ডলীর মতামত বা তাদের চিন্তাধারা দ্বারা রাজনৈতিক দলগুলো প্রভাবিত হয়ে থাকে।
৬. অন্যান্য কারণ : নির্বাচকমণ্ডলীকে সরকারের চতুর্থ অঙ্গ বলার অন্যতম কারণসমূহ হলো- প্রতিনিধি প্রত্যাহার,
সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে মতামত, সরকারের স্বৈরাচারিতা রোধ এবং জনস্বার্থ রক্ষা, সরকার ও জনগণের সেতু, প্রতিনিধি নির্বাচন প্রভৃতি।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সরকার গঠনের প্রথম পদক্ষেপ নির্বাচন থেকে শুরু করে সরকার পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ এবং সরকারের পরিবর্তন ও পতন ঘটানোর ক্ষেত্রে নির্বাচকমণ্ডলী অসাধারণ ক্ষমতার অধিকারী। তাই এ ক্ষমতার বিবেচনায় নির্বাচকমণ্ডলীকে সরকারের চতুর্থ অঙ্গ বলে আখ্যায়িত করা যায়।