উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু প্রখ্যাত কথাসাহিতিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘পুঁইমাচা’ শীর্ষক গল্প থেকে চয়ন
প্রসঙ্গ : উক্তিটি সহায়হরি চাটুয্যের স্ত্রী অন্নপূর্ণার। অন্নপূর্ণা তার বড় মেয়ে ক্ষেন্তির ভোজনলোলুপতাকে কটাক্ষ করে তিরস্কারপূর্বক কথাটা বলেছেন ।
বিশ্লেষণ : সহায়হরি- অন্নপূর্ণা দম্পতির বড় মেয়ে ক্ষেন্তি পুঁইশাক খুব পছন্দ করতো। হতদরিদ্র ব্রাহ্মণ সহায়হরির সামর্থ্য ছিল না মেয়েদের ভালোমন্দ কিছু তৈরি করে খাওয়ানোর। ক্ষেন্তি প্রায়ই এপাড়া সেপাড়ার আগান-বাগান ক্ষেত খামার থেকে খাওয়ার জন্য এটা ওটা কুড়িয়ে আনতো। মা অন্নপূর্ণা মেয়ের এই বদভ্যাসের জন্য সব সময় বকাঝকা করতেন। একদিন দুপুরের পূর্বে অন্নপূর্ণা, সংসারের প্রতি স্বামীর ঔদাসীন্যের কারণে তাঁকে যখন বকাঝকা করছিলেন তখন ক্ষেন্তি তার ছোট বোনদের নিয়ে বাড়ি ঢুকল। ক্ষেন্তির হাতে এক বোঝা মোটা ও হলদে রঙের পুঁইশাক দেখে অন্নপূর্ণা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন। তিনি মেয়েকে লক্ষ্য করে ঝাঁঝের সাথে বললেন, ‘নানা, নিয়ে যা, খেতে হবে না মেয়ে মানুষের আবার অত নোলা কিসের? একপাড়া থেকে আর একপাড়া গিয়ে নিয়ে আসবে দুটো পাকা পুঁইশাক ভিক্ষে করে? যা, যা তুই যা, দূর করে বনে দিয়ে আয়।” সহায়হরি মেয়েদের পক্ষ নিতে গিয়ে উল্টো ধমক খেয়ে চুপ মেরে গিয়ে ছিলেন। মায়ের এরূপ তীব্র ভর্ৎসনার মুখে ক্ষেন্তি হতবুদ্ধি হয়ে পড়ল। তার হাত থেকে ইতোমধ্যে পুঁইশাকের বোঝা। মাটিতে পড়ে গিয়েছিল।
মন্তব্য : অন্নপূর্ণা গরিব হলেও কারো কাছ থেকে কিছু চেয়ে আনাটা পছন্দ করতেন না।