উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ নারী-পুরুষের সঠিক কাজে সহায়তা প্রদান করে আসছে। নারীদের তবুও মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয় না। তবে বর্তমান বিশ্বে নারীদের কল্যাণে বেশ কাজ করা হচ্ছে। নারীকল্যাণ গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারীকে নির্যাতন-মুক্ত করার মাধ্যমে তাদের আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক, দৈহিক প্রভৃতি দিকের সুষম উন্নয়ন
সাধনই নারী কল্যাণের প্রধান লক্ষ্য। তাই বিশ্ব শতাব্দীর বিশ্ব প্রতিযোগিতায় প্রতিটি রাষ্ট্রই নারীকল্যাণের মাধ্যমে নারীকেও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলছে।
→ নারী কল্যাণ : নারী কল্যাণ হচ্ছে এমন কার্যক্রম যার মাধ্যমে সমাজস্থিত নারীদের নানাবিধ সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক ভুমিকা পালন ও জাতীয় উন্নয়নে সক্ষম করে তোলাকে বুঝায়। নারী কল্যাণই পারে একটি দেশের দ্রুত উন্নতি সাধন করত। তাইতো নেপোলিয়ন বলেছিলেন তোমরা আমায় একটি শিক্ষিত মা দাও
তোমাদের আমি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব।
সাধারণ অর্থে : সাধারণ অর্থে নারী সমাজের সার্বিক কল্যাণ সাধনই নারী কল্যাণ । বাংলাদেশেও বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের মত নারী কল্যাণের প্রতি বেশ মনোযোগ মনোনিবেশ স্থাপন করেছে ।
[] প্রামাণ্য সংজ্ঞা :
প্রখ্যাত মনীষী Mamum M Elizabeth বলেছেন, “নারী কল্যাণে সেই কর্মসূচি যা সরকারি ও বেসরকারী পর্যায়ে পরিচালিত হয়ে থাকে। যাতে দরিদ্র নারীদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে ফলশ্রুতিতে তারা উপার্জনে সক্ষম হয়।”
বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক মিয়া বলেছেন, “নারী কল্যাণ বলতে ঐ সকল “আর্থ-সামাজিক পদক্ষেপকে বুঝায়
যা নারীদের সমস্যাবলি মোকাবেলা করার মাধ্যমে পরিবার ও সমাজে তাদের স্বাভাবিক ভূমিকা পালনে সহায়তা করে।” ১৯৯৫ সালের বেইজিং সম্মেলনে নারী কল্যাণ নারী দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিরোধ, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাও নারী অর্থনীতির বিকাশকেই সংজ্ঞায়ন করা হয়েছে।
→ নারী কল্যাণের মর্মকথা ঃ নারী পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমৃদ্ধ দেশ গঠন করা যেতে পারে। নারীদেরকে পিছনে রেখে কোনো দেশই উন্নতি সাধন করতে পারে না। নারীদের চাহিদা ও প্রয়োজন পূরণ, সমস্যা সমাধান, পরিবার
পরিকল্পনা, অধিকার প্রতিষ্ঠা, ক্ষমতায়ন সমতাবিধান, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ, জাতীয় উন্নয়নে তাদের অবদান
শক্তিশালীকরণ প্রভৃতি নিশ্চিতকরণে নারী কল্যাণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশেও নারী কল্যাণের নিমিত্তে বিভিন্ন পদক্ষেপ গৃহীত হয়ে আসছে। তাই বিশ্বব্যাপী নারী কল্যাণ ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও কল্যাণের লক্ষ্যে প্রণীত বিভিন্ন কার্যক্রমের সমষ্টিই নারী কল্যাণ হিসেবে গণ্য হয়। নারীদের মনো-দৈহিকসহ সার্বিক কল্যাণের সাধনই এ নারী কল্যাণ ধারণাটির মূল উদ্দেশ্য। বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক নারী জনসংখ্যা কর্মক্ষম নয়। যা দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে। আর তাই এদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন কার্যক্রমের আওতায় এনে গঠনমূলক উন্নয়নে সংযোজন করাতে হবে। তাহলে আমাদের দেশটার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।