অথবা, নারী ও পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতিমালাসমূহ আলোচনা কর।
অথবা, নারী ও পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতিমালাসমূহ সম্পর্কে যা জান লেখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগে যে পারিপার্শ্বিক অবস্থায় মানুষের বাসস্থান সেই পারিপার্শ্বিক অবস্থার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ধারক ও বাহক হচ্ছে নারী। তাই নারীদের উপর পরিবেশের একটা প্রভাব রয়েছে। আর এ কারণে নারী ও পরিবেশ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে।
নারী ও পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতিমালা : বিশ্বব্যাপী একটি জিনিসকে হাইলাইট করা হয় যে, নারী উন্নয়ন ব্যতীত সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। আর এ প্রসঙ্গে নারীর সাথে পরিবেশকে সম্পৃক্ত করা হয়। কারণ পরিবেশ পরিস্থিতি যদি ইতিবাচক না হয়, তবে নারী উন্নয়ন সম্ভব নয়। ১৯৬০ সালের দিকে প্রকৃতি ও পরিবেশের উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আলোচিত হতে থাকে। ২০০০ সালের জন্য জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচিতে ঘোষিত হয় যে, পরিবেশ সহস্রাব্দে তৎপর হওয়ার এখনই সময়। ১৯৭২ সালের সমাবেশের প্রধান বিষয় ছিল ২১ শতকের পরিবেশ ও তার উন্নয়ন। বিংশ শতাব্দীতে পরিবেশ উন্নয়নের সাথে সাথে আর একটি বিষয় উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে আলোচিত হতে থাকে তা হলো নারী উন্নয়ন। কারণ প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনায় টেকসই ও পরিবেশগতভাবে উপর্যুক্ত ভোগ ও উৎপাদন, ধরন ও বিকাশের ক্ষেত্রে নারীর একটি অপরিহার্য ভূমিকা রয়েছে। পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলনে এ বিষয়টি স্বীকৃতি পেয়েছে এবং এজেন্ডা-২১ তার প্রতিফলন ঘটেছে। তবে বিংশ শতাব্দীতে এসে নারী এবং তার শিক্ষাবিস্তার ও উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে গুরুত্ব পেতে থাকে। ১৯৭৫ সালকে আন্তর্জাতিক নারীবর্ষ এবং ১৯৭৫-৮৫কে নারী দশক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, নারী ও পরিবেশ পরস্পর আন্তঃসম্পর্কিত। তাই পরিবেশ থেকে নারীকে পৃথক করা যাবে না। অর্থাৎ পরিবেশ উন্নয়নের জন্য নারীদের অংশগ্রহণ এবং নারী উন্নয়ন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আর এজন্য নারী ও পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতিমালা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন করা অত্যাবশ্যক।