উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু ত্রিশোত্তর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘প্রাগৈতিহাসিক শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে দুর্ধর্ষ ডাকাত ভিখুর আদিম অকৃত্রিম কাম-প্রবৃত্তি সম্পর্কে গল্পকার উল্লিখিত মন্তব্য করেছেন।
বিশ্লেষণ : ভিখু ছিল এক দুর্ধর্ষ ডাকাত সর্দার। ডাকাতি করার পাশাপাশি সে জোর করে নারীদেহ ভোগ করতে অভ্যস্ত ছিল। একবার পাহানার শ্রীপতি বিশ্বাসের বোনকে অপহরণ করার দায়ে তাকে জেলে যেতে হয়েছিল। রাখু বাগদীর বৌকে ফুসলিয়ে নিয়ে ভিখু হাতিয়ায় পালিয়ে গিয়েছিল। এরপর বসন্তপুরের বৈকুণ্ঠ সাহার গদিতে ডাকাতি করতে গিয়ে তার দলের অন্যান্য সকলে ধরা পড়লেও ভিখু ডান কাঁধে বর্শার একটা খোঁচা খেয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছিল। অনেক কষ্টে চিতলপুরের পেহ্লাদের কাছে আশ্রয় পেয়ে প্রায় বিনা চিকিৎসায় ডানহাতটা হারিয়ে ভিখু আরোগ্য লাভ করার পর একদিন তার ভিতরকার কামতৃষ্ণা মাথা চাড়া দিয়ে উঠল। বাড়িতে যখন কেউ ছিল না তখন পঙ্গু ভিখু পেহ্লাদের বৌয়ের দিকে হাত বাড়াল। পেহ্লাদ ফিরে এসে ভিখুর নেমকহারামির কথা জানতে পেরে বেদম মার দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিল। রাতের আঁধারে ভিখু পেহ্লাদের ঘরে আগুন দিয়ে মহকুমা ঘুমিয়ে সে তার পূর্বের শহরের বাজারে পালিয়ে গিয়ে ভিক্ষে করতে শুরু করল। কিছুদিন ভিক্ষে করার পর পেটভরে খেয়ে ও আরামে স্বাস্থ্য ফিরে পেল । আবার তার মধ্যে কামতৃষ্ণা জাগ্রত হলো। এখন নারীসঙ্গহীন এই নিরুৎসব জীবন তার আর ভালো লাগে না।
মন্তব্য : কামুক ভিখুর কাম-প্রবৃত্তির নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে উল্লিখিত বাক্যটিতে |