অথবা, নারীমুক্তি সম্পর্কে মার্কস এর অভিমত কী?
অথবা, নারীমুক্তির বিষয়ে মার্কস কী বলেছেন?
অথবা, মাকর্সের নারীমুক্তির মতবাদ বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, মার্কসের নারীমুক্তির অভিমত সংক্ষেপে তুলে ধর।
উত্তর৷ ভূমিকা : কালজয়ী দার্শনিক মার্কস তার দর্শনে যে সেমস্ত বিষয়ের অবতারণা করেছেন তার মধ্যে নারীমুক্তি বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মার্কসীয় দর্শনে নারীমুক্তির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। নারীমুক্তি বিষয়ে মার্কস আশারবাণী ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন নারী হবে মুক্ত ও স্বাধীন।
নারীমুক্তি : মার্কসের নারীমুক্তির ধারণা নারীর প্রত্যাশা পূরণ করবে। নারী হবে মুক্ত ও স্বাধীন। নারীর উপর পুরুষের শাসন বিলুপ্ত হবে। যে সকল শক্তি নারী নির্যাতনের কারণ তারা পরাভূত হয়ে নিশ্চিহ্ন হবে; নারীমুক্তি পাবে। নতুন সমাজব্যস্থায় মানুষের মানসিকতায় পরিবর্তন আসবে। এ অবস্থায় কেউ প্রভু হতে চাইবে না। কাউকে ক্রীতদাস হতে হবে না। নারী ও পুরুষ পরস্পরে মিলে এমন সামাজিক কাঠামো এবং সামাজিক ভূমিকা গড়ে তুলবে যার ফলে নারী ও পুরুষ সকলে নিজ নিজ মানবিক সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনে সক্ষম হবে। তাঁর মতে বিশ্বের নারী সংঘবদ্ধ হলে, নিজেদের শ্রেণি সম্পর্কে সচেতন হলে, সচেতন নারী সংঘবদ্ধ শক্তিতে
নারীনির্যাতন নিশ্চিহ্ন করার মাধ্যমে নারীর মুক্তি আসবে। মার্কস যেখানে সামাজিক শ্রেণীসংঘাতকে দায়ী করেছেন সেখানে র্যাডিকাল নারীবাদিগণ পুরুষ-নারীর জৈবিক পার্থক্যের মধ্যেই আধিপত্যের সম্পর্ক নির্ণয় করেছেন। নারী-পুরুষের গতানুগতিক সামাজিক সম্পর্ক ও ভূমিকাকে তারা স্বাভাবিক সম্পর্ক হিসেবে দেখতে নারাজ। তারা মনে করেন মানবজাতিকে টিকিয়ে রাখা কেবল নারীর একার দায়িত্ব নয়, বরং পুরুষেরও দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু গতানুগতিক সামাজিক সম্পর্কের ফলে পুরুষ এই দায়িত্বকে আদৌ গ্রহণ করে না, তারা কেবল ভ্রূণ দান করেই তাদের দায়িত্ব শেষ করে।
আলোচনার সূত্র ধরে আমরা বলতে পারি, নারীমুক্তির জন্য নারীকে সংগঠিত হতে হবে। নারীকে নিজের বর্তমান অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ মুক্তির লক্ষ্যে সচেতন হতে হবে। কেবল সচেতনতাই নয়, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে ও সমাজের পরিবর্তন ঘটাতে হবে।