অথবা, নারীবাদের সংজ্ঞা দাও।
অথবা, নারীবাদ কী?
অথবা, নারীবাদ সম্পর্কে তোমার মূল্যায়ন কী?
অথবা, নারীবাদ সম্পর্কে তোমার মন্তব্য তুলে ধর।
অথবা, নারীবাদ কাকে বলে?
উত্তর৷ ভূমিকা : জ্ঞানের প্রতিটি শাখার তাত্ত্বিক ভিত্তি থাকে। নারীবিষয়ক অধ্যয়ন ও গবেষণার তাত্ত্বিক ভিত্তি হচ্ছে নারীবাদ। ঊনবিংশ শতাব্দী এবং বিংশ শতাব্দীতে নারীকে নিজ অধিকার ও মুক্তি তথা স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হয়েছে। নারী অধিকার তথা নারীমুক্তি আন্দোলনে যারা অবদান রেখেছেন তাদের নারীবাদী আখ্যায়িত করা হয় এবং নারীর প্রতি বৈষম্য শোষণের বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতনতাকে বলা হয় নারীবাদ।
নারীবাদ : নারীবাদ শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে “Feminism”। ইংরেজি “Feminism” শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ “Femme” থেকে, যার অর্থ নারী। এই “Femme” শব্দটির সাথে ism বা বাদ কথাটি সংযুক্ত হয়ে “Femisism” বা নারীবাদে রূপ লাভ করেছে। বিভিন্ন নারীবাদী বিভিন্নভাবে নারীবাদের সংজ্ঞা দিয়েছেন। নিম্নে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সংজ্ঞা উপস্থাপন করা হলো :
রোজালিড ডেলমার ‘What is Feminism’ গ্রন্থে বলেন “Feminism is a usually defined as an active disire to change women’s position in society” অর্থাৎ, সাধারণভাবে নারীবাদ বলতে বুঝায় সমাজে নারীর অবস্থান পরিবর্তনের জন্য সক্রিয় আগ্রহ। জুডিথ অ্যাস্টোলারা তাঁর “Feminism and Democratic Transition in Spain” গ্রন্থে বলেছেন, “Feminism is a proposal for social transformation as well as movement that strives to and the oppression.” অর্থাৎ, নারীবাদ হচ্ছে সামাজিক রূপান্তর ও আন্দোলনের লক্ষ্যে একটি পরিকল্পনা যা নারী নিপীড়ন বন্ধ করার চেষ্টা করে। সাসকিয়া উইরিঙ্গা তাঁর ‘Subversive Women’ গ্রন্থে বলেছেন, “নারীবাদ হচ্ছে একটি বিধ্বংসী প্রক্রিয়া, যা নারী সম্বন্ধে প্রচলিত ধারণা পাল্টে দিয়ে এর নতুন অর্থ খুঁজে বের করে জেন্ডার সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাকে বর্জন করে ব্যক্তিগত
এবং সামগ্রিকভাবে নারীত্ব সম্পর্কে নতুন ধারণা প্রদান করে।”
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায়, নারীবাদ হচ্ছে এমন একটি তত্ত্বীয় কাঠামো ও প্রায়োগিক প্রয়াস যা নারী সমাজের উপর পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বহুমাত্রিক নির্যাতনের কারণ ও ফলাফল এবং নারীমুক্তির ব্যবস্থাপত্র প্রদান করে থাকে।