উৎস : উদ্ধৃত অংশটুকু কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প ‘একরাত্রি’ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : কলকাতা গমনের পর নায়কের মনোভাব পরিবর্তন প্রসঙ্গে আলোচ্য অংশের অবতারণা করা হয়েছে।
বিশ্লেষণ : নাজির সেরাস্তাদার হওয়ার প্রত্যয় নিয়ে নায়ক পাড়ি জমিয়েছিল কলকাতায়। বাবার উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করে অন্তত জজ আদালতের হেডক্লার্ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তার কলকাতায় আসা। অথচ কলকাতায় এসে তার মনে নতুন ভাবকল্পনার জন্ম নেয়। সে ভুলে যায় তার পূর্ব পরিকল্পনার কথা। কলকাতায় রাজনৈতিক নেতাদের বক্তৃতা তার মনে দারুণ রেখাপাত করে। পরাধীন ভারতবর্ষের দুঃখবেদনা তাকে সমব্যথী করে তোলে। সে যোগ দেয় স্বদেশী আন্দোলনে। মিটিং মিছিল, সভাসমিতিতে সে নিয়মিত যোগদান করে একজন একনিষ্ঠ কর্মী হয়ে উঠল। দেশের জন্য প্রাণবিসর্জন দেওয়া সে আশুকর্তব্য বলে মনে করল। নিঃস্বার্থ ত্যাগী নেতা হওয়ার বাসনায় অধীর হয়ে উঠল। মাটসীনি ও গারিবালডি এ দুই ইটালিয়ান রাজনৈতিক নেতা তার আদর্শ হিসেবে পরিগণিত হলো। মাসীনি ও গারিবালডির মত সে পরাধীন ভারতবর্ষকে উদ্ধার করার পরিকল্পনা করতে লাগল। দেশোদ্ধারের কাজের নেশায় সে ভুলেই গেল কলকাতায় সে নাজির সেরেস্তাদার হওয়ার জন্য এসেছিল।
মন্তব্য : দেশোদ্ধারের পরিকল্পনা নায়ককে কীভাবে অন্যসব চিন্তা থেকে দূরে রেখেছিল তা এখানে প্রকাশ পেয়েছে ।