নসরত শাহের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর : ভূমিকা : ‘Nusrat Shah eldest Son of Sultan Alauddin husain Shah, succeded his father in 1519 AD
and assumed the title of Sultan Nasirudin Nusrat Shah.’ অর্থাৎ- আলাউদ্দিন হুসেন শাহের জ্যেষ্ঠপুত্র নসরত শাহ ১৫১৯ সালে নাসিরউদ্দিন নুসরত শাহ উপাধি ধারণ করে বাংলার সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। পিতার মত তিনিও একজন উদার ও প্রজা কল্যাণকামী শাসক ছিলেন। তবে তার রাজত্বের শেষ দিকে তাকে সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে হয়েছিল।
নসরত শাহের পরিচয় : মধ্যযুগীয় বাংলার ইতিহাসে সুলতান নাসিরউদ্দিন নসরত শাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন শাসক ছিলেন। সামরিক প্রতিভাবলে বাংলার রাজ্যসীমা সম্প্রসারণ করে বাংলার গৌরব অক্ষুণ্ণ রাখতে তিনি সক্ষম হয়েছিলেন। নিম্নে নসরত শাহের পরিচয় দেয়া হলো।
১. জন্ম পরিচয় : নসরত শাহ আলাউদ্দিন হুসেন শাহের জ্যেষ্ঠপুত্র ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি তার মেধার পরিচয় দেন। তার জন্ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায় না।
২. রাজকার্যে অংশগ্রহণ : পিতা জীবিত থাকাকালেই তিনি রাজকার্যে জড়িত হয়ে পড়েছিলেন। পিতা জীবিত থাকাকালে
তিনি যুবরাজ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ফলে তিনি প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েন। এছাড়া তাকে বিশেষ অধিকার হিসেবে
স্বনাম মুদ্রা উৎকীর্ণ করার অধিকারও প্রদান করা হয়।
৩. সিংহাসনে আরোহণ : হুসেন শাহের মৃত্যুর পর ১৫১৯ সালে নসরত শাহ বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। সিংহাসনে আরোহণ করে তিনি ‘নাসিরউদ্দিন নসরত শাহ’ উপাধি ধারণ করেন।
৪. রাজা হিসেবে কৃতিত্ব : নসরত শাহ বাংলার সিংহাসনে আরোহণকালে উত্তর ভারতের রাজনীতি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন
ঘটতে থাকে। ইব্রাহীম লোদীর দুর্বলতার কারণে বিহারে লোহানী বংশের প্রতিষ্ঠা হয়। এই সুযোগ নসরত শাহ আজমগড় পর্যন্ত
তার রাজ্যসীমা বৃদ্ধি করেন। মুঘল আক্রমণ থেকে তিনি বাংলাকে রক্ষা করতে পেরেছিলেন। নুসরতের রাজত্বের শেষ সময় পর্যন্ত কামরূপ ও কামতার উপর বাংলার কর্তৃত্ব অক্ষুণ্ণ ছিল। উড়িষ্যার রাজার সাথেও তার যুদ্ধ হয়েছিল। তবে এ যুদ্ধের ফলাফল সম্পর্কে সঠিকভাবে কোনো তথ্য জানা যায় না।
৫. রাজত্বকাল : ১৫১৯ সালে সিংহাসনে আরোহণের পর থেকে নসরত শাহ পিতার ন্যায় বাংলার রাজ্যসীমা বাড়াতে থাকেন। তিনি রাজত্বের শেষে দিকে এসে মুঘলসহ অন্যান্য সীমান্তবর্তী রাজ্য নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত বাংলার সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে পেরেছিলেন। তিনি ১৫৩২ সাল পর্যন্ত বাংলার সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
৬. মৃত্যু : নসরত শাহ ১৫৩২ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তবে তার মৃত্যু সম্পর্কে সঠিক ধারণা করা যায় না। গৌড়ে পিতার সমাধি জিয়ারতকালে তার জনৈক ক্রীতদাস কর্তৃক তিনি নিহত হন বলে কথিত আছে ।


উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, নসরত শাহ তার রাজত্বকালে পিতার নীতি অনুসরণ করে সফলতা লাভ করেছিলেন। তিনি পিতার ন্যায়.বাংলা সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যের কয়েকটি রচনায় তার নাম পাওয়া যায়। স্থাপত্য শিল্পেও তার বড় অবদান ছিল ।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a4%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%aa/