ধর্ম সাধারণ লোকের কালচার, আর কালচার শিক্ষিত, মার্জিত লোকের ধর্ম।”- ব্যাখ্যা কর

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু মননশীল প্রাবন্ধিক মোতাহের হোসেন চৌধুরী বিরচিত ‘সংস্কৃতি কথা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : ধর্ম ও কালচারের পার্থক্য সম্পর্কে প্রাবন্ধিক এখানে তার অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
বিশ্লেষণ : ধর্ম ও কালচারের পার্থক্য অত্যন্ত সুস্পষ্ট। ধর্ম সাধারণ লোকের কালচার এবং কালচার শিক্ষিত, মার্জিত, বিবেকবান মানুষের ধর্ম। কালচার মানে উন্নততর জীবন সম্পর্কে চেতনা— সৌন্দর্য, আনন্দ ও প্রেম সম্পর্কে অবহিতি। ধর্ম মানে জীবনের নিয়ন্ত্রণ । সংস্কৃতি বা কালচার মানুষকে উদার করে, উন্নত করে। ধর্ম মানুষকে স্থবির ও পঙ্গু করে। কালচার মানুষকে বাঁচতে শেখায় আর ধর্ম মানুষকে তার অনুশাসন দ্বারা গৃহকোণে রুদ্ধ করে রাখে। কালচার মানুষের সুকুমার প্রবৃত্তিসমূহের বিকাশ ঘটায় আর ধর্ম মানুষের স্বাভাবিক বিকাশের পথ রুদ্ধ করে পৃথিবীতে যে সকল ধর্ম প্রচলিত আছে তা সাধারণ মানুষের কালচার অর্থাৎ সাধারণ মানুষ ধর্মকেই তার ইহকালের পরকালের সংস্কৃতি হিসেবে জানে। কিন্তু শিক্ষিত, বিবেকবান ও মার্জিত মানুষ মনে করে কালচারই তার ধর্ম। কালচার ছাড়া সে অন্য কোন ধর্ম পালনের তাগিদ অনুভব করে না। আর সাধারণ মানুষ ধর্ম মেনে চলাটাকেই কালচার বলে ভাবে।
মন্তব্য: ধর্ম ও কালচারের মধ্যে যে বিরোধ তা ধারণা ও ব্যবহারগত। ধর্ম মূলত কালচারের একটা উপকরণ, যা কালচারকে সমৃদ্ধ করার চেয়ে দরিদ্র করে বেশি।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%95%e0%a6%a5%e0%a6%be-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%a4/