উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প ‘একরাত্রি’ শীর্ষক গল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : শিক্ষকতা জীবনের প্রথম দিকে নায়ক ছাত্রদের মাঝে দেশপ্রেমের বাণী প্রচার করতে গিয়ে যে অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছিল সে প্রসঙ্গে উক্তিটির অবতারণা করা হয়েছে।
বিশ্লেষণ : গল্পের নায়ক পিতার মৃত্যুতে দিশেহারা হয়ে পড়ে। তার সকল উচ্চাশা তিরোহিত হয়। সংসারে সে এখন একা নয়; দুটি বোন এবং মায়ের দায়িত্ব এসে বর্তায় তার উপর। সংসারে সেই একমাত্র পুরুষ সদস্য হওয়ায় সংসারের ব্যয়নির্বাহের সমস্ত দায়িত্ব এখন তার উপর। বাধ্য হয়ে সে নোয়াখালী অঞ্চলের একটি এন্ট্রান্স স্কুলে সেকেন্ড মাস্টারির চাকরি গ্রহণ করে। স্কুলের চাকরি নিয়ে তার বেশ ভালোই লাগে। সে ভাবে তার উপযুক্ত কাজ সে পেয়েছে। উৎসাহ এবং উপদেশ দিয়ে এক একটি ছাত্রকে সে ভাবী ভারতবর্ষের সেনাপতি করে গড়ে তুলবে এটি তার প্রত্যাশা ছাত্রদের ভিতর দিয়ে নিজে দেশসেবা করতে পারবে ভেবে সে এক ধরনের আত্মতৃপ্তি লাভ করে। কিন্তু কিছু দিন যেতেই তার সে স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায়। সে বুঝতে পারে ছাত্রদের মধ্যে দেশ নিয়ে তেমন কোন ভাবনা নেই। দেশের চিন্তার থেকে তাদের ভিতরে পরীক্ষার চিন্তাই বেশি কাজ করে। তাছাড়া গ্রামার আলজেব্রার বহির্ভূত কোন বিষয় ছাত্রদের মাঝে বললে হেডমাস্টারও অসন্তুষ্ট হন। ছাত্র-শিক্ষক সকলের ভিতরে দেশপ্রেমের অভাব দেখে নায়ক নিদারুণ হতাশ হয়ে পড়ল।
মন্তব্য : দেশের স্বাধীনতা অর্জনে এভাবে ছাত্র শিক্ষকদের নিস্পৃহ দেখে নায়ক মর্মাহত হয়েছে।