উত্তর : আলোচ্য অংশটুকু প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমদ রচিত ‘আয়না’ গল্পগ্রন্থের অন্তর্গত ‘হুযুর কেবলা’ ছোটগল্পে উক্তিটি এমদাদের। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত এমদাদ গ্রামবাসী মুরিদদের পীর সাহেবের ভণ্ডামি সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে উক্তিটি করেছে। ‘হুযুর কেবলা’ গল্পের পীর সাহেব একজন নারীলোলুপ লম্পট। তিনি নিজের কাম-বাসনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে তাঁর দুই বিশ্বস্ত শাগরেদের সহযোগিতায় এক প্রতারণামূলক মোরাকেবা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এ তথাকথিত মোরাকেবা অনুষ্ঠানে রাসূলের রুহকে আনার তামাশা করে পীর সাহেবের জন্য রজবের সদ্যবিবাহিত স্ত্রী কলিমনকে হালাল করা হয়। এখানে শরিয়তের দোহাই পেড়ে এ ভণ্ডামিপূর্ণ রায়কে সকল মুরিদকে দিয়ে সমর্থন করিয়ে নেয়া হয়। বাপ-চাচা ও পাড়াপড়শীদের অনুরোধে, আদেশে ও তিরস্কারে অতিষ্ঠ হয়ে রজব তার সদ্যবিবাহিতা প্রাণপ্রিয় স্ত্রী কলিমনকে তালাক দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বাড়ি ত্যাগ করল। তালাক প্রাপ্তা কলিমনের ঘন ঘন মূর্ছার মধ্য দিয়ে পীর সাহেবের সাথে শুভবিবাহ সুসম্পন্ন হলো। এমদাদ অপরিসীম ধৈর্য ধারণ করে কতকটা অচেতন অবস্থায় এ চাতুর্যপূর্ণ প্রতারণা দেখছিল। হঠাৎ চেতনপ্রাপ্ত হয়ে সে পীর সাহেবের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। সকলে মার’ ‘মার’ শব্দে এমদাদকে নিবৃত্ত করতে এগিয়ে এল। সবাই তাকে যখন একযোগে মারতে শুরু করল তখন এমদাদ গ্রামের
মাতব্বর সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলল- “তোমরা নিতান্ত মূর্খ। এ ভণ্ডের চালাকি বুঝিতে পারিতেছ না? নিজের সখ মিটাইবার জন্য হযরত পয়গম্বর সাহেবকে লইয়া তামাসা করিয়া তাঁহার অপমান করিতেছে। তোমরা এ শয়তানকে পুলিশে দাও।” গ্রামবাসী ও তাদের মাতব্বরকে পীরের ভণ্ডামি সম্পর্কে অবহিত করার লক্ষ্যে এমদাদ উক্তিটি করেছিল।