উত্তর : হরপ্রসাদ শাস্ত্রী বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের একজন নিষ্ঠাবান গবেষক ও অন্যতম প্রবন্ধকার রূপে প্রসিদ্ধি লাভলাভ করেছেন। ‘তৈল’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিকের সুচিন্তিত সিদ্ধান্তমুখী মানসিকতা, রচনার মধ্যে বিশুদ্ধ কৌতুক রসের পরিবেশনা প্রবন্ধটিকে উপভোগ্য করে তুলেছে। প্রাবন্ধিক তৈলের যে শক্তি তা তিনি বিভিন্ন ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং সেই পর্যবেক্ষণযাত অভিজ্ঞতাকে এখানে তুলে এনেছেন। প্রাবন্ধিক দেখেছেন তৈলের সর্বশক্তিমত্তার প্রকাশ। যেখানে সবকিছু ব্যর্থ- সেখানে তৈল কীভাবে কাজ করে সফল হয়। প্রাবন্ধিকের ভাষায় : “বাস্তবিক তৈল সর্বশক্তিমান; যাহা বলের অসাধ্য, যাহা বিদ্যার অসাধ্য, যাহা ধনের অসাধ্য, যাহা কৌশলের অসাধ্য, তাহা কেবল একমাত্র তৈল দ্বারা সিদ্ধ হতে পারে।” হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তৈলের মহিমা বর্ণনা করতে গিয়ে আবেগের বশবর্তী হলেও কখনো বাস্তব থেকে সরে যাননি। তিনি তাই তৈলের মহিমা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন : “তৈলের মহিমা অপরূপ । তৈল নহিলে জগতের কোন কার্য সিদ্ধ হয় না। তৈল নহিলে কল চলে না, প্রদীপ জ্বলে না, ব্যঞ্জন সুস্বাদু হয় না, চেহারা খোলে না, হাজার গুণ থাকুক তাহার পরিচয় পাওয়া যায় না, তৈল থাকিলে তাহার কিছুরই অভাব থাকে না।” সুতরাং বলা যায় যে, তৈল বিভিন্ন কাজে লাগে; এর গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। তাই প্রাবন্ধিক বলেছেন তৈলের মহিমা অপরূপ।