উৎস : আলোচ্য পদ্যাংশটুকু বাংলাদেশের প্রধান কবি শামসুর রাহমান বিরচিত ‘বার বার ফিরে আসে’ শীর্ষক দেশাত্মবোধক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : সংগ্রামী জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়েই যে ভবিষ্যতের নতুন সভ্যতা গড়ে উঠে কবি আলোচ্য অংশে সে কথাই বলতে চেয়েছেন। আন্দোলনকারীদের পায়ের নিচে জ্বলজ্বল করে সভ্যতার নীল নকশা।
বিশ্লেষণ : বিদেশি শাসন শোষণের দ্বারা বার বার বাঙালির অগ্রগতির পথ রুদ্ধ হয়েছে। বার বার থামিয়ে দেয়া হয়েছে আমাদের স্বাধিকার আন্দোলনকে আর আমরা অকুতোভয় বাঙালিরা সভ্যতার সে জয়যাত্রাকে বুকের রক্ত ঢেলে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি সামনের দিকে। ১৯৬৯ সালের স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনের সময় আমাদের উপর নেমে এসেছিল সামরিক শাসনের খড়গাঘাত। পাকিস্তানি শাসকেরা বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনকে বুলেট বেয়নেট দিয়ে দমন করতে চেয়েছিল। এ দমন নিপীড়নের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল বাংলাদেশের আবাল বৃদ্ধ বনিতা। তারা রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে আদায় করেছিল তাদের ভোটাধিকার। সত্তরের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়েও তাদেরকে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা করতে হয়েছিল আত্মাধিকার। সে উত্তাল দিনে যারা মিছিলে শরিক হয়েছিল তারাই প্রকৃত দেশগড়ার কারিগর। যুগে যুগে দেশে দেশে তারাই গড়ে তুলেছে নতুন সভ্যতা। এদের পদভারেই জীর্ণ হয়েছে ঘুণে ধরা সভ্যতা। এরা অতীত সভ্যতার কঙ্কাল সরিয়ে গড়ে তুলেছে নব্য সভ্যতার নীল নকশা। এদের পায়ের নিচে জ্বলজ্বল করে আগামী দিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। এসব সংগ্রামী মানুষের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠে নতুন জাতি । যে জাতি অগ্রগামী বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যায় ভবিষ্যতের পথে। গড়ে তোলে নতুন সভ্যতা।
মন্তব্য : আত্মোৎসর্গকারী মানুষের পায়ের নিচে জ্বলজ্বল করে নব্য সভ্যতার নীল নকশা। তাদের ত্যাগের বিনিময়ে গড়ে উঠে নতুন দেশ ও জাতি।