অথবা, ডক্যুমেন্টারি স্টাডির দুর্বল দিকসমূহ লিখ।
অথবা, ডক্যুমেন্টারি স্টাডির সমস্যাগুলো তুলে ধর।
অথবা, ডক্যুমেন্টারি স্টাডির সীমাবদ্ধতা আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : সামাজিক গবেষণার তথ্যসংগ্রহে যেসব পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে ডক্যুমেন্ট স্টাডি অন্যতম । সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক গবেষকগণ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি নথিপত্র ও দলিল এমন তথ্য হিসেবে ব্যবহার করে গবেষণা কর্ম পরিচালনা করে তাকে ডক্যুমেন্ট স্টাডি বলা হয় । এ পদ্ধতির যেমন কতকগুলো সুবিধা রয়েছে । তেমনি আবার কতকগুলো অসুবিধাও রয়েছে।
ডক্যুমেন্ট স্টাডির অসুবিধা : এ পদ্ধতির অসুবিধাসমূহ হলো :
১. পক্ষপাত : গবেষণা ছাড়াও অন্য কারণে ডক্যুমেন্ট সংরক্ষণ করা হয় বলে পক্ষপাতিত্ব দেখা দেয় ।
২. ক্ষণস্থায়িত্ব : অনেক ডক্যুমেন্ট যেমন-প্রাচীন পুঁথি, জীবনচরিত, চিঠিপত্র ইত্যাদি এমনভাবে লিপিবদ্ধ করা হয় যার দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ দুষ্কর।
৩. অসম্পূর্ণতা : উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে অনেক সময় ডক্যুমেন্ট অসম্পূর্ণ থাকে ।
৪. দুষ্প্রাপ্যতা : অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অনেক সময় কোনো ডক্যুমেন্টেই পাওয়া যায় না বলে সংরক্ষণ করা হলেও তা ধ্বংস হয়ে থাকে ।
৫. নমুনায়নগত সীমাবদ্ধতা : যেহেতু একমাত্র শিক্ষিত শ্রেণিই ডক্যুমেন্ট প্রণয়ন ও গঠনে সক্ষম, তাই অশিক্ষিত অংশের সাথে বৃত্তির নমুনায়ন সম্ভব নয় ।
৬. মানসম্মত ছকের অভাব : অনেক ডক্যুমেন্ট মানসম্মত ছকের ভিত্তিতে তৈরি হয় না ।
৭. ভাষাগত সীমাবদ্ধতা : ডক্যুমেন্ট সাধারণত মানুষের ভাষাগত আচরণের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকে। এগুলো অন্যান্য আচরণ সম্পর্কে প্রত্যক্ষ কোনো তথ্য প্রদান করে না ।
৮. সাংকেতীকরণ সমস্যা : এ পদ্ধতি বর্ণনাত্মক হওয়ার কারণে সংখ্যায়ন করা যথেষ্ট কষ্টকর।
৯. সময়গত তুলনা : এ স্টাডি দীর্ঘ সময়ের তারতম্যেই শুধু তুলে ধরতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে অন্যান্য পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করতে পারে না।
১০. সহায়ক বিষয়াবলির অভাব ব্যাপকভাবে লক্ষ করা যায় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে ডক্যুমেন্ট পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । সমসাময়িক ঘটনাবলিকে জানতে এবং এ ঘটনাগুলো কীভাবে সংঘটিত হয় সে সম্পর্কে অবহিত করতে এর প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করা যায় না ।