অথবা, জীবন নির্বাহী খামার ও বাণিজ্যিক খামারের মধ্যকার তুলনামূলক আলোচনা কর।
অথবা, জীবন নির্বাহী খামার ও বাণিজ্যিক খামারের মধ্যে কোনটি বেশি উপযোগী বর্ণনা কর।
অথবা, জীবন নির্বাহী খামারের ইতিবাচক ও নৈতিকবাচক দিকগুলো আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : যে খামার থেকে কৃষক তার পরিবারের ভরণপোষণের জন্য প্রয়োজীয় আয় সংগ্রহ করে তাকে জীবন নির্বাহী খামার বলে,। পারিবারিক ভরণপোষণই এই খামারের প্রধান লক্ষ্য।
জীবন নির্বাহী খামারের সুবিধাসমূহ : জীবন নির্বাহী খামারের বেশ কতকগুলো সুবিধা রয়েছে যেগুলো আবার বাণিজ্যিক খামারের ক্ষেত্রে ভাগ করা যায় না। জীবন নির্বাহী খামারের সুবিধাগুলো নিম্নরূপ :
১. কৃষি উৎপাদনের অভিজ্ঞতার আলোকে একথা বলা যায়, জীবন নির্বাহী খামার সাধারণত পরিবারের সদস্যরাই শ্রমদান করার কারণে শ্রমের প্রান্তিক উৎপাদন ধনাত্মক থাকা পর্যন্ত তারা উৎপাদনে নিয়োজিত থাকে। তাছাড়া অধিক উৎপাদনের দরুন তারাই সরাসরি উপকৃত হয় বলে আগ্রহ ও উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করে। ফলে এ খামারে শ্রমিক প্রতি উৎপাদন বেশি হয়।
২.জীবন নির্বাহী খামার আকারে ছোট হয় বলে কৃষকের পক্ষে সেখানে উৎপাদন কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও তত্ত্বাবধান করা সম্ভব হয়। ফলে উৎপাদন ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়ে।
৩. এ খামারে জমিসহ উৎপাদনের বিভিন্ন উপকরণের সদ্ব্যবহার সম্ভব হয়।
৪. জীবন নির্বাহী খামারে শ্রমিকদের বেশি কর্মসংস্থান হয়। জনবহুল কৃষিপ্রধান দেশগুলোতে তাই জীবন নির্বাহী খামারেরই অধিক প্রচলন দেখা যায়।
জীবন নির্বাহী খামারের অসুবিধাসমূহ : জীবন নির্বাহী খামারের বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে। এগুলো নিম্নরূপ :
১. জীবন নির্বাহী খামার সাধারণত ক্ষুদ্রায়তনের হয় বলে সেখানে ব্যয়বহুল আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা
যায় না।
২.এ খামার বেশ ছোট হয় বিধায় এখানে বৃহদায়তন উৎপাদনের ব্যয় সংকোচের সুবিধা ভোগ করা যায় না।
৩,এ খামারে পরিবারের প্রয়োজনে বেশ কয়েকটি পণ্য উৎপাদিত হয় বলে এখানে উৎপাদনে বিশেষীকরণের ভোগ করা যায় না।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সকল উন্নয়নশীল দেশে জীবন নির্বাহী খামারের ব্যাপক প্রচলন দেখা যায়। জীবন নির্বাহী খামার ক্ষুদ্রায়তনের হয় এবং যান্ত্রিকরণের অবর্তমানে কৃষিকাজ প্রধানত প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।