জাতীয় যুব উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়নে পঞ্চম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কৌশলসমূহ বর্ণনা কর।

উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় এক- তৃতীয়াংশ যুবক এবং এদের বয়স ১৮-৩৫ বছরের মধ্যে। যুবকরা এ দেশের সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। তাদের কাজ দিতে না পারলে তারা দেশের জন্য বোঝা হিসেবে চিহ্নিত হবে। তাই যুবকদের শক্তিতে পরিণত করার জন্য গঠন করা হয়েছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। দেশের যুবকদের আর্থ-
সামাজিক সমস্যার সমাধান এবং উৎপাদনমুখী শিক্ষা ও আত্মকর্মসংস্থানের নিমিত্তে ১৯৮০-এর দশকে প্রথম যুবনীতি
প্রণয়ন করা হয় । পরবর্তীকালে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ২০০৩ সালে সংশোধিত যুব উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন করা হয়।
→ পঞ্চম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কৌশলসমূহ ঃ পঞ্চম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার গৃহীত যুব উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়নে নিম্নোক্ত কৌশলসমূহ অবলম্বন করা হয় ঃ
১. গ্রাম ও শহরের যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ, ঋণ ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা।
২. আধুনিক প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্ব প্রদান করে প্রশিক্ষণের মান উন্নত করা। এ ছাড়া প্রচলিত প্রশিক্ষণসমূহের সহায়তা নেয়া।
৩. শিক্ষিত যুবকদের চাকরি নির্ভরশীল মানসিকতা পরিবর্তন করে আত্ম-কর্মসংস্থান প্রকল্পের ব্যাপারে উৎসাহিত করা।
৪. যুব সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে কমিউনিটি অংশগ্রহণ এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্তিকরণ।
৫. তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত যুব সংগঠন গড়ে তোলা এবং সেখানে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
৬. সকল সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কার্যক্রম যা যুবকদের জন্য প্রণীত সেগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করা।
৭. যুবকদের জন্য প্রণীত সকল উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে ৫০% মহিলাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
৮. বিভিন্ন আর্থ- সামাজিক উন্নয়ন ও যুব সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। উল্লেখযোগ্য উন্নয়নমূলক কর্মসূচি হলো-
| শিক্ষা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, পুষ্টি সচেতনতা, পরিবার কল্যাণ প্রভৃতি।
৯. যুব সম্প্রদায়ের শারীরিক ও মানসিক উন্নয়ন রুচিশীল বিনোদনমূলক আনুষ্ঠানের উপর গুরুত্ব প্রদান।
১০. বিদেশী যুব স্বেচ্ছাসেবীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি হস্তান্তরে সহায়তা প্রদান ।
১১. যুব উন্নয়নে সরকার, ব্যক্তি ও এনজিওদের অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা।
১২. যুবদের চরিত্র, শৃঙ্খলা ও সহিঞ্চুতা বৃদ্ধির জন্য সেমিনার ও অন্যান্য কর্মসূচি প্রবর্তন করা।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, উপযুক্ত কৌশলসমূহের যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় যুব উন্নয়ন নীতি কার্যকর করা সম্ভব। অন্যথায় কর্মসূচি ব্যাহত হবে।