অথবা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কী?
অথবা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের সংজ্ঞা দাও।
অথবা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কাকে বলে?
উত্তর৷ ভূমিকা : বর্তমান পৃথিবীতে বিরাজমান সামাজিক সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জনসংখ্যা সমস্যা। তাছাড়া বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশসমূহে এ সমস্যা আরও প্রকট। পৃথিবীর বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৬৫০ কোটি। প্রতিবছর পৃথিবীতে ৮ কোটির মত লোক বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ২.০৮% বসবাস করে, এ দেশের আয়তন পৃথিবীর মোট ভূ-ভাগের ৩,০০০ ভাগের ১ ভাগ। প্রতি বছর বাংলাদেশেই প্রায় ২১ লক্ষ লোক বৃদ্ধি পায়। এ অতিরিক্ত জনসংখ্যা নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করছে। তাই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ : অধিক হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রবণতা রোধ করাকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রবণতা রোধ করাকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বলে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ফলে পৃথিবীর বা কোনো অঞ্চলের জনসংখ্যাকে কাম্য স্তরে নিয়ে আসা সম্ভব। পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণের মাধ্যমে পরিবারের আকার ছোট রাখাই হলো জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ। বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার পূর্বের তুলনায় কমে এলেও মৃত্যুহার কমে যাওয়ার কারণে এখনও জন্মহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আমাদের মত দরিদ্র দেশে জন্মহার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করার পাশাপাশি গর্ভনিরোধক ব্যবহারের প্রতিও জোর দেয়া প্রয়োজন। দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ তথা পরিবার পরিকল্পনার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। যেমন- খাবার বড়ি, কনডম, কপারটি, ইনজেকশন, লাইগেশন, ভ্যাসেকটমি ইত্যাদি। এছাড়া প্রাকৃতিক বা প্রত্যাহার পদ্ধতি ও অনেকে ব্যবহার করেন। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য জনসংখ্যা সমস্যা কবলিত দেশগুলো জনসংখ্যা নীতি গ্রহণ করে থাকে। আমাদের দেশে জনসংখ্যা নীতির মূল কথা হলো “ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটি সন্তানই যথেষ্ট।” চীনের জনসংখ্যা নীতির মূল্য কথা হলো, “One couple one child”.
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, এদেশে যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এ হার অব্যাহত থাকলে দেশে জনবিস্ফোরণ ঘটবে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য উল্লিখিত পদ্ধতিগুলো যথেষ্ট নয়। এর জন্য প্রয়োজন অধিক জনসংখ্যার কুফল সম্পর্কে জনগণের মধ্য গণসচেতনতা সৃষ্টি।