ছয় দফার গুরুত্বপূর্ণ দফা ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জন্য স্বায়ত্তশাসন ও অধিকার প্রতিষ্ঠা।
বিস্তারিত:
- ছয় দফা ছিল ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রস্তাবিত একটি রাজনৈতিক কর্মসূচী।
- এই কর্মসূচীর মূল লক্ষ্য ছিল পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করা এবং একটি স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্রে পরিণত করা।
- ছয় দফার মূল দফাগুলি ছিল:
- কেন্দ্রীয় সরকার: কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে রাষ্ট্র প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক নীতি, মুদ্রা, ওজন ও পরিমাপ, যোগাযোগ, রেলপথ, বন্দর ও নৌ-পরিবহন। প্রাদেশিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শ্রম, স্থানীয় সরকার, আইন ও শৃঙ্খলা, ও অন্যান্য বিষয়।
- আর্থিক ব্যবস্থা: পূর্ব পাকিস্তানের রাজস্ব আয়ের ৫০% কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে, বাকি ৫০% থাকবে প্রাদেশিক সরকারের কাছে। প্রাদেশিক সরকারের নিজস্ব কর আদায় করার অধিকার থাকবে। পূর্ব পাকিস্তানে সমস্ত বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নিয়ন্ত্রণ থাকবে প্রাদেশিক সরকারের কাছে।
- বাণিজ্য ও শিল্প: পূর্ব পাকিস্তানে সমস্ত প্রধান ও ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রাদেশিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। পূর্ব পাকিস্তানের বাজারে পশ্চিম পাকিস্তানের পণ্যের উপর রক্ষণাবেক্ষণমূলক কর আরোপ করা যাবে।
- চাকরি: পূর্ব পাকিস্তানের সকল সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫০% শেয়ার থাকবে পূর্ব পাকিস্তানের জনগোষ্ঠীর জন্য। কেন্দ্রীয় সরকারের সকল সরকারি ও আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানে পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব থাকবে।
- মুদ্রা: পূর্ব পাকিস্তানের জন্য একটি আলাদা মুদ্রা চালু করা হবে। পূর্ব পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থাকবে।
- সামরিক বাহিনী: পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব সামরিক বাহিনী থাকবে। পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক বাহিনীর নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫০% শেয়ার থাকবে পূর্ব পাকিস্তানের জনগোষ্ঠীর জন্য।
গুরুত্ব:
- ছয় দফা ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা ও দাবির প্রতিফলন।
- এটি ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মূল ভিত্তি।
- ছয় দফার নীতিগুলি আজও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নীতি ও অর্থনীতির ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।