উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু স্বনামধন্য কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘পুঁইমাচা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : ক্ষেন্তির বিয়ের পর মেয়ে জামাই বিদায়ের সময় অন্নপূর্ণার মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল সে সম্পর্কে গল্পকার আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।
বিশ্লেষণ : ক্ষেন্তির বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে বলে গ্রামে হৈ-চৈ শুরু হয়েছিল। এ নিয়ে সহায়হরিকে একঘরে করে রাখার উদ্যোগও চলছিল। এরই মধ্যে বৈশাখ মাসের প্রথমদিকে সহায়হরির এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের ঘটকালিতে ক্ষেন্তির বিবাহ হয়ে গেল। দ্বিতীয়পক্ষে বিবাহ করলেও পাত্রটির বয়স চল্লিশের খুব বেশি ছিল না। তবুও অন্নপূর্ণার এ বিবাহে সম্মতি ছিল না। কিন্তু পাত্রটি সঙ্গতিপন্ন শহর অঞ্চলে বাড়ি, সিলেটি চুন ও ইটের ব্যবসায়ে ভালো পয়সাকড়ি করেছে জানতে পেরে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সম্মত হয়েছিলেন। জামাইয়ের বয়স একটু বেশি বলে প্রথমে অন্নপূর্ণা জামাইয়ের সামনে বের হতে সঙ্কোচ বোধ করছিলেন। পরে ক্ষেন্তি কষ্ট পাবে একথা ভেবে বরণের সময় তিনি সামনে গেলেন। তিনি প্রথমত ক্ষেন্তির সুপুষ্ট হাতখানি জামাইয়ের হাতে তুলে দিলেন । অসহ্য দুঃখকষ্টের কারণে চোখের জলে তাঁর গলা বন্ধ হয়ে এল। তিনি কোন কথাই বলতে পারলেন না। হত দরিদ্র এই ব্রাহ্মণী চোখের জলে নিজেকে স্নাত করে মেয়েকে বিদায় জানালেন।
মন্তব্য : জামাই পছন্দ না হওয়ার কারণে মা অন্নপূর্ণার মনে এই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল।