চাহিদা স্থিতিস্থাপকতার ধারণাটির গুরুত্ব আলোচনা কর।

রকেট সাজেশন
রকেট সাজেশন

অথবা, চাহিদার স্থিতিস্থাপকতার ভূমিকা ও প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ কর।

উত্তর: ভূমিকা : চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা ধারণাটি একটি দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদনকারি, সরকার এবং আরও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান তাদের ভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এটির উপর নির্ভর করে জেনে থাকে। বিভিন্ন অর্থনৈতিক সমস্যা এবং নীতির ক্ষেত্রে চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। নিম্নে তা আলোচনা করা হল-

১. একচেটিয়ামূলক প্রতিযোগিতা বাজারে। একচেটিয়ামূলক প্রতিযোগিতার বাজারে বিক্রেতা যদি অন্য ব্রান্ডের চেয়ে নিজ ব্রান্ডের দ্রব্যের দাম কম ধরে এবং দ্রব্যটির চাহিদা যদি স্থিতিস্থাপক হয় তবে সেক্ষেত্রে বাড়তি ক্রেতা আত্মর্ষণ করতে সক্ষম হয়। অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত অস্থিতিস্থাপক চাহিদা সম্পন্ন দ্রব্যের দাম বাড়ালেও সে ক্রেতা হারাবে না।

২. মজুরী নির্ধারণঃ যদি কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকের চাহিদা অস্থিতিস্থাপক হয় তবে শ্রমিক সংঘ ধর্মঘট ইত্যাদি পদক্ষেপের মাধ্যমে তার মজুরী বৃদ্ধি করতে পারবে। কিন্তু শ্রমিকের চাহিদা স্থিতিস্থাপক হয় তবে এ ধরণের সংগ্রামী কার্যক্রম ফলপ্রসু হবে না।

৩. উৎপাদনকারীর নিকট: কোন দ্রব্যের মূল্য নির্ধারণের চাহিদার স্থিতিস্থাপকতার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ দ্রব্যের চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা হলে উৎপাদনকারী কম দ্রব্য উৎপাদনতরে অধিক দাম ধার্য করে মুনাফা সর্বোচ্চ করার চেষ্টা করে। কিন্তু চাহিদা স্থিতিস্থাপকতা হলে যোগান বৃদ্ধি কবে দাম ধার্য করে মুনাফা সর্বোচ্চ করবে।

৪. যুক্ত দ্রব্যের দামের ক্ষেত্রেঃ চাহিদার স্থিতিস্থাপকতার ধারণাটি যুক্ত দ্রব্যের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সহায়ক, সে ক্ষেত্রে যুক্তভাবে দুটি দ্রব্য একই সাথে উৎপাদিত হয়, সে ক্ষেত্রে আলাদাভাবে এদের উৎপাদন খরচ নির্ধারণ করা যায় না। যেমন- তুলা ও তুলা বীজ, পাট ও পাট খড়ি ইত্যাদি। এদের দাম নির্ধারিত হয় সংশিষ্ট দ্রব্যের চাহিদার স্থিতিস্থাপকের উপর নির্ভর করে।

৫. কর ধার্যের ক্ষেত্রে: কোন দ্রব্যের উপর কর ধার্যের ক্ষেত্রে সরকারের নিকট তার চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা জ্ঞান খুবই প্রয়োজনীয়। কারণ কোন দ্রব্যের উপর কর ধার্য করলে জনগণ তথা করদাতাদের উপর কিরূপ অসুবিধা হবে তা চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা দ্বারা নির্ণীত হয়।

৬. আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে: আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চাহিদার স্থিতিস্থাপকতার ধারণাটির গুরুত্ব খুবই অপরিসীম। দ্রব্যের আমদানী-রপ্তানীর পরিমাণ, বাণিজ্য হার, বাণিজ্য হতে লাভ, লেনদেন ভারসাম্য ইত্যাদির ক্ষেত্রে চাহিদার স্থিতিস্থাপকতার যথেষ্ট গুরুত্ব আছে।।

উপসংহার: উপরোক্ত আলোচনার পরিশেষে আমরা বলতে পারি চাহিদার স্থিতিস্থাপকতার দ্বারা সরকার কোনো দ্রব্যের প্রয়োজনীয়তা জেনে বুঝে তার পদক্ষেপ নিতে পারে যা জনকল্যাণ এর সহায়ক ইত্যাদি।