অথবা, চাহিদার পূর্বাভাস কি? এর প্রকারভেদসমূহ আলোচনা কর।
উত্তর: চাহিদার পূর্বাভাস: অর্থনীতিতে ‘চাহিদার পূর্বাভাস’ ধারণাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, উদ্যোক্তা বা উৎপাদক প্রতিষ্ঠান কোন দ্রব্যের উৎপাদনের পরিমাণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে দ্রব্যটির ভবিষ্যৎ চাহিদা বিশেষণ করেই উৎপাদনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কোন উৎপাদনের পরিমাণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে দ্রব্যটির ভবিষ্যৎ চাহিদা বিশেষণ করেই উৎপাদণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কোন উৎপাদক প্রতিষ্ঠান বা ফার্ম উৎপাদন পরিকল্পনা গ্রহণের সময় কেবল বর্তমান
চাহিদাই বিবেচনা করে না, বরং ভবিষ্যতে দ্রব্যাটির চাহিদা কিন্তুশ হতে পারে তা অনুমান করেই উৎপাদনা পারকল্পনা গ্রহণ করে। যেমন-ভবিষ্যতে পেট্রোল বা ডিজেলের দাম কি রকম বাড়তে পারে এবং তার প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে কোন ধরণের গাড়ির চাহিদা কিরূপ হবে তা অনুমান করেই পেট্রোল ভিত্তিক বা ডিজেল ভিত্তিক মটর গাড়ির উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এই অনুমানকৃত চাহিদা বা বাজার সম্পর্কিত ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণাকেই অর্থনীতিতে চাহিদার পূর্বাভাস বলা হয়।
সংক্ষেপে বলা যায় ভবিষ্যতের একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোন ব্যাপারে কি ঘটতে পারে তার ধারণা করাকে সাধারণভাবে। পূর্বাভাস বলে।
ফিলিপ কটলার বলেন, “শাড়ির পিছনের জানালা দিয়ে তাকিয়ে থেকে কোন ব্যক্তির নির্দেশ অনুসারে অন্ধবারে পড়ি চালনা করাকে পূর্বাভাস বলে। আর ভবিষ্যৎ চাহিদার অনুমান বা পরিস্থিতি নিরূপণ করাকে চাহিদার পূর্বানুমান বা পূর্বাভাস বলে। এর মাধ্যমে সময়মত প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদন করা যায়। কিন্তু উৎপাদনের সাথে বিভিন্ন উপাদান যেমন- কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি, খুচরা যন্ত্রাংশ, শ্রম ইত্যাদি জড়িত থাকে। তাই মাহিদার পূর্বানুমান করতে পারলে প্রতিয়ান সকল প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করতে পারে। ফলে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দক্ষ ও ফলপ্রসূ পণ্য এবং পণ্যের পরিকল্পনা প্রণয়ন করা সম্ভবপর হয়। সুতরাং পণ্য এবং পণ্যের পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য প্রতিষ্ঠান যে প্রক্রিয়ার সাহায্যে সপ্তাব্য চাহিদা নিরূপণ করে থাকে তাকে চাহিদার পূর্বাভাস বলে। পূর্বাভাস দুই প্রকার যথা:
(ক) নিষ্ক্রিয় পূর্বাভাস ও
(খ) সক্রির পূর্বাভাস
(ক) নিষ্ক্রিয় পূর্বাভাস: নিষ্ক্রিয় পূর্বাভাস বলতে বুঝায় কার্ম তার দ্রব্য বিক্রয়ের কোন নতুন কর্মকাণ্ড বা উদ্যোগ ছাড়াই যে পরিমাণ চাহিদার পূর্বাভাস পায় যা পরিস্থিতি অনুমান করে তাকে বুঝায়।
(খ) সক্রিয় পূর্বাভাস: দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য ফার্ম তার উদ্যোগী কর্মকান্ড বা নতুন কৌশল গ্রহণের পর যে পরিমাণচাহিদার পরিবর্তন হবে বলে পূর্বাভাস পায় তাই হল সক্রিয় পূর্বাভাস। অর্থাৎ পরিকল্পিত কর্মকাণ্ড গ্রহণের ফলে যে পরিমাণ বিক্রয় বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা যায় তাতেই সক্রিয় পূর্বাভাস বলে।