চাকমা অর্থনীতর বর্ণনা দাও।
অথবা, চাকমা অর্থনীতি কিরূপ? ব্যাখ্যা কর।
অথবা, চাকমা অর্থনীতি কেমন?
অথবা, চাকমাদের অর্থনীতি সম্পর্কে লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : পার্বত্য চট্টগ্রামে বান্দরবান জেলার মোট আয়তন প্রায় ৫,৩০০ বর্গমাইল। এ বিস্তৃত এলাকায় বসবাসরত উপজাতির সংখ্যা অনেক। এদের মধ্যে চাকমা উপজাতি প্রধান। এখানে প্রায় ৩৯ হাজার চাকমা পরিবার বসবাস করে। চাকমা অর্থনীতি : ঐতিহ্যগতভাবে চাকমারা পর্যায়ক্রমে চাষ বা জুম চাষের উপর নির্ভরশীল। পাহাড়ের
গাছপালা কেটে, শুকিয়ে ও পুড়িয়ে নিয়ে সেখানে ধান, তিল ও অন্যান্য ফসলের মিশ্রিত বীজ একত্রে বপন করে পরবর্তীতে যেটা যখন পাকে সেটা তখন ঘরে তোলার কৃষি পদ্ধতির নামই জুম চাষ । চাকমা সমাজে এখন জমি ব্যক্তি মালিকানায় বরাদ্দ দেয়া চলছে। ফলে যেখানে পছন্দ সে অনুযায়ী জুম চাষ করছে। হালকৃষির অধিকাংশই ব্যক্তিমালিকানায়। চাকমা উত্তরাধিকার প্রথা বাঙালি হিন্দুসমাজের উত্তরাধিকার প্রথার প্রায়
অনুরূপ । অর্থাৎ চাকমা পুত্র সন্তানেরাই কেবল জমির উত্তরাধিকারী কন্যারা নয়। ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে চাকমারা বাঙালিদের থেকে হালচাষ পদ্ধতি শিখেছে। দুই পাহাড়ের মাঝখানে সমতল ভূমিতে চাকমারা ধান চাষ করে। এছাড়া রবার চাষ, কাঠের গাছ ও ফল-ফলাদির চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চাকমা অর্থনীতির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এই অনেকেই মোরগ-মুরগি ও শূকর পালন করে। বন-বনাঞ্চল থেকে সংগ্রহ কৌশলের মাধ্যমে চাকমারা নানা ধরনের শাকপাতা-সবজি সংগ্রহ করে। বাঁশ ও বেত দিয়ে কুটির শিল্পজাত দ্রব্য তৈরিতেও চাকমাদের বেশ সুনাম রয়েছে। এছাড়া চাকমারা নিজস্ব তাঁতে কাপড় বুনে। ব্যবসায়িক ভিত্তিতেও কেউ কেউ
কাপড় বুনে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলো। নার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, চাকমা সমাজে সম্পত্তিতে ব্যক্তিমালিকানা প্রচলন, মুদ্রা অর্থনীতির ব্যাপক প্রসার, আধুনিক শিক্ষা গ্রহণ ইত্যাদির ফলে সামাজিক স্তরবিন্যাসে আয় ও শিক্ষাই প্রধান উপাদান হিসেবে স্বীকৃত।