অথবা, চলক কী? বিচ্ছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন চলকের মধ্যে বৈসাদৃশ্য আলোচনা কর।
অথবা,চলকের সংজ্ঞা দাও। বিচ্ছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন চলকের মধ্যে বৈসাদৃশ্য বিশ্লেষণ কর।
অথবা, চলক কাকে বলে? বিচ্ছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন চলকের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : বিজ্ঞান একটি বিমূর্ত প্রত্যয় । আর বিজ্ঞানের ভিত্তি হলো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি । বিজ্ঞানের উদ্ভব ও বিকাশ এবং অব্যাহত অগ্রগভির যাত্রা বজায় রাখে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি তবে এ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি একটি পদ্ধতি নয়, বরং একাধিক পদ্ধতির সমন্বয় । একটি পূর্বাপর বিশ্লেষণ ও প্রাসঙ্গিক বিষয়াদির সাথে কার্যকারণ সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে একটি সাধারণ নিয়ম প্রতিষ্ঠা করাই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির অন্যতম লক্ষ্য। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এ লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করার জন্য কতিপয় উপাদান নিয়ে কাজ করে। এ উপাদানগুলোর মধ্যে চলক অন্যতম ।
চলকের সংজ্ঞা : বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সবচেয়ে ক্ষুদ্র অথচ সর্বাধিক সংবেদনশীল উপাদান হচ্ছে চলক । সাধারণ কথায় যা পরিবর্তিত হয় তাই চলক। মূলত চলক এমন এক ধরনের গুণ, বৈশিষ্ট্য বা অবস্থা, যা একই পরিপ্রেক্ষিতে ব্যক্তি,একক বা ঘটনা পরিবর্তনের সাথে সাথে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন মনীষী বিভিন্নভাবে চলকের সংজ্ঞা প্রদান করেন। নিম্নে কয়েকটি সংজ্ঞা আলোচনা করা হলো :
Barry F. Anderson এর মতে, “A variable is a set of mutually exclusive properties.” (1968, P-
৪) অর্থাৎ, চলক হলো পরস্পর বিচ্ছিন্ন গুণের সমাবেশ।
P. V. Young , “A variable is any quantity or characteristics which may posses different numerical values or categories (1948, P-280).” অর্থাৎ, চলক হলো যে কোনো পরিমাণ বা বৈশিষ্ট্য।যা বিভিন্ন সংখ্যামান অথবা শ্রেণিতে বিভক্ত।
Johan Galtung এর মতে, “A variable is a set of values that form a classification.” (1969, P.20) Gupta এবং Gupta এর ভাষায়, “চলক শব্দটি বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের নির্দেশ দেয় যা একটি গণসংখ্যা নিবেশনে পরিমাণগত বা বিস্তৃতভাবে পার্থক্যপূর্ণ হতে পারে।”অতএব বলা যায়, গুণগত বা পরিমাণগত যে কোনো পরিবর্তনের সূচকই হচ্ছে চলক। বস্তুত সামাজিক গবেষণায় গুণগত ও পরিমাণগত উভয় চলকের উপরই তথ্য সংগ্রহ করা হয় ।
বিচ্ছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন চলকের মধ্যে পার্থক্য : বিচ্ছিন্ন চলক এবং অবিচ্ছিন্ন চলক দুটি পরিসংখ্যান উপাত্ত উপস্থাপনের দুটি আলাদা রূপ । এদের গঠন উপস্থাপনের পদ্ধতিতে বেশ পার্থক্য বিদ্যমান। এসব পার্থক্যের আলোচনা নিম্নরূপ :
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, উল্লিখিত দৃষ্টিকোণ থেকে বিছিন্ন চলক এবং অবিচ্ছিন্ন চলকের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। তবে এ দুটির মধ্যে পার্থক্য থাকলেও সম্পর্ক যে নেই তা বলা যায় না। তাই অনেক ক্ষেত্রে একটি অপরটির সমার্থক আবার বিপরীতার্থক ।