অথবা, গারোদের মৃত্যু পরবর্তী আচার সম্পর্কে আলোচনা কর।
অথবা, গারোদের মৃত্যু পরবর্তী আচার-আচরণ কেমন?
অথবা, গারোদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পর্কে লিখ।
উত্তরা৷ ভূমিকা : বাংলাদেশে যেসব উপজাতি রয়েছে তাদের মধ্যে গারোরা অন্যতম। ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর অঞ্চলে গারোরা বাস করে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের মেঘালয় রাজ্য আসাম ও পার্বত্য ত্রিপুরা রাজ্যেও গারোদের এক বিশাল জনগোষ্ঠী বাস করে।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া : গারোদের বিশ্বাস দেহ থেকে আত্মা বিদায় নিলেই মৃত্যু ঘটে। আত্মা অমর। তাদের বিশ্বাস মৃত্যুর পর আত্মা ‘চিকমাং নামক স্থানে চলে যায়। চিকমাং হলো মৃতের দেশ। তাদের বিশ্বাস গারো পাহাড়ের দক্ষিণ-পূর্বে (ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত) পাহাড়ের চূড়ায় চিকমাং অবস্থিত। তাদের বিশ্বাস চিকমাংয়ে কেবল মৃতেরাই যেতে পারে। জীবিতরা পারে না। গারোরা মৃতদেহের গোসল দেয়। গোসলের পর মরদেহ মেঝেতে রেখে দেয়। মরদেহের মাথার কাছে খাবার (চাল, ডিম, ভাত) রেখে দেয়। এসবকে ঘিরে অনেক বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে। যাহোক, মৃতদেহ কমপক্ষে একদিন একরাত ওখানেই রেখে দেয়ার পর তা কোনো এক রাতে সাধারণত দ্বিতীয় রাতে পোড়ানো হয়। গারো মৃতদেহ দিনের আলোয় পোড়ানোর রীতি নেই, মৃতদেহ পোড়ানোর পর ছত্র জঙ্গলে নিয়ে ফেলে দেয়। হাড়গুলো মাটির পাত্রে তুলে মৃতের বাড়ির কাছে মাটিতে গর্তে পুতে রাখে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, গারোদের মধ্যে বর্তমানে শিক্ষার প্রসার ঘটায় অনেক কুসংস্কার থেকে তারা মুক্তি পাচ্ছে, তারা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠছে।