অথবা, সমস্যার বিরোধী ফলাফল কী?
অথবা, সমস্যার বিরোধী ফলাফল কাকে বলে?
অথবা, সমস্যার বিরোধী ফলাফলের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর।। ভূমিকা : সমস্যাকে কেন্দ্র করেই বিজ্ঞানের জিজ্ঞাসা ও গবেষণা শুরু হয়। তাই সমস্যাকে বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। সমস্যা ছাড়া সমাধানের যেমন কোন অর্থ হয় না। তেমনি সমস্যা ছাড়া বৈজ্ঞানিক
অনুসন্ধানের ও কোন অর্থ হয় না। যে কোন গবেষণা করার জন্য প্রথমেই সমস্যাটিকে চিহ্নিত করতে হবে। সমস্যাটিকে চিহ্নিত করতে না পারলে তা সমাধান করাও সম্ভব হয় না। তাই সমস্যা নির্বাচন, সমস্যা সংজ্ঞায়ন ও সমস্যা ব্যাখ্যাকরণ ও সমস্যা নিয়ে কাজ গবেষকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। সুতরাং সার্থকভাবে গবেষণা পরিচালনা করার জন্য সমস্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পরস্পর বিরোধী ফলাফল : বৈজ্ঞানিক গবেষণার সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে যদি পরস্পর বিরোধী ফলাফল পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে সমস্যার সমাধান সফল হয় নি। আবার সমস্যাটি নিয়ে গবেষণা শুরু করতে হবে। একই প্রশ্নের উত্তর যদি আমরা একাধিক বার পরস্পর বিরোধী উত্তর পাই তাহলে এরূপ কোন উত্তরের উপরই আমরা আস্থা রাখতে পারি না। কারণ একই প্রশ্নের উত্তর কিভাবে একাধিকবার পরস্পর বিরোধী ফলাফল হবে তা খুঁজে বের করতে হবে। ধরা যাক,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান গবেষণাগারে একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনজন মনোবিজ্ঞানী স্বাধীনভাবে তিনটি পরীক্ষণ পরিচালনা করেছিলেন। প্রশ্নটি ছিল গণ্ডগোল পূর্ণ পরিবেশে সমস্যা সমাধানে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে কিনা তা পরীক্ষণ করে দেখা। একজন পরীক্ষণবিদের ফলাফলে দেখতে পাওয়া গেল যে, গণ্ডগোলবিহীন পরিবেশের চেয়ে গণ্ডগোলপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষকরা অনেক বেশি ভুল করেছে। দ্বিতীয়ত মনোবিজ্ঞানীর ফলাফল পাওয়া গেল ঠিক উল্টো অর্থাৎ এ পরীক্ষণের ফলাফলে দেখা গেল যে, গণ্ডগোলবিহীন পরিবেশেই পরীক্ষকরা সমস্যা সমাধানে অধিক সংখ্যক ভুল করেছে। তৃতীয় জনের পরীক্ষণে দেখা গেলে যে, গণ্ডগোলপূর্ণ এবং গণ্ডগোলবিহীন পরিবেশে সমস্যা সমাধান ভুল করার ভিতর তেমন কোন পার্থক্য পাওয়া যায় নি। সমাধান সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। ফলে আবার প্রশ্ন দেখা দেবে। এবারের প্রশ্নটি হবে একই সমস্যার উপর পরীক্ষণ পরিচালনায় তিন প্রকারের ফলাফল পাবার কারণ কী?এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পরীক্ষণবিদগণ চল নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করেন। অবাঞ্ছিত নিরপেক্ষ চলের প্রভাবের ফলে হয়তো পরস্পর বিরোধী ফলাফল পাওয়া যায়। এ সমস্ত অবাঞ্ছিত চলের প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে পরীক্ষণের ফলাফল সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, গবেষণা সমস্যার কিছু কৌশল রয়েছে। এ কৌশল বা উপায়গুলো ব্যবহার করলে যে কোন গবেষণা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তবে বৈজ্ঞানিক গবেষণা শুরু করার আগে সমস্যাগুলো শনাক করতে হবে। যদি সমস্যাগুলো শনাক্ত করা যায় তাহলে সহজেই সমাধান করা সম্ভব হবে। সার্থকভাবে বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনার জন্য সমস্যাকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই গবেষণা সমস্যার কৌশল বা উপায়গুলোর গুরুত্ব
মনোবিজ্ঞানে অস্বীকার করা যায় না।


