
গবেষণা প্রতিবেদন হল একটি গবেষণামূলক কার্যক্রমের একটি পূর্ণাঙ্গ ও সুশৃঙ্খল বিবরণ। এটিতে গবেষণার উদ্দেশ্য, পদ্ধতি, ফলাফল ও আলোচনার সুচিন্তিত ও সুসংবদ্ধ বিবরণ থাকে। একটি ভাল গবেষণা প্রতিবেদন গবেষণার মূল উপাদানগুলিকে সুস্পষ্ট ও নির্ভুলভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হওয়া উচিত।
গবেষণা প্রতিবেদনের ধাপসমূহ নিম্নরূপ:
প্রথম ধাপ: গবেষণা প্রস্তাবনা
গবেষণা প্রস্তাবনা হল গবেষণা প্রতিবেদনের প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এটিতে গবেষণার উদ্দেশ্য, সমস্যা, পদ্ধতি, ফলাফলের প্রত্যাশা ইত্যাদি বিষয়গুলির একটি সংক্ষিপ্ত ও সুনির্দিষ্ট বিবরণ থাকে। গবেষণা প্রস্তাবনা সঠিকভাবে তৈরি হলে পরবর্তী ধাপগুলিতে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা সহজ হয়।
দ্বিতীয় ধাপ: গবেষণা পরিকল্পনা
গবেষণা প্রস্তাবনা অনুমোদিত হলে গবেষণা পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। এটিতে গবেষণার উদ্দেশ্য, সমস্যা, পদ্ধতি, সময়সীমা, বাজেট ইত্যাদি বিষয়গুলির একটি বিস্তারিত বিবরণ থাকে। গবেষণা পরিকল্পনা গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি গাইডলাইন হিসেবে কাজ করে।
তৃতীয় ধাপ: গবেষণা কার্যক্রম
গবেষণা পরিকল্পনা অনুযায়ী গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এটিতে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা করা হয়।
চতুর্থ ধাপ: গবেষণা প্রতিবেদন রচনা
গবেষণা কার্যক্রম সম্পন্ন হলে গবেষণা প্রতিবেদন রচনা করা হয়। এটিতে গবেষণার উদ্দেশ্য, সমস্যা, পদ্ধতি, ফলাফল ও আলোচনার একটি সুচিন্তিত ও সুসংবদ্ধ বিবরণ থাকে।
গবেষণা প্রতিবেদনের উপাদানসমূহ
গবেষণা প্রতিবেদনের সাধারণ উপাদানসমূহ নিম্নরূপ:
- শিরোনামপত্র: গবেষণা প্রতিবেদনের শিরোনামপত্রে গবেষণার বিষয় ও উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা উচিত।
- ভূমিকা: ভূমিকায় গবেষণার উদ্দেশ্য, সমস্যা, পদ্ধতি, ফলাফলের প্রত্যাশা ইত্যাদি বিষয়গুলির একটি সংক্ষিপ্ত ও সুনির্দিষ্ট বিবরণ দেওয়া হয়।
- প্রাসঙ্গিক সাহিত্যের পর্যালোচনা: প্রাসঙ্গিক সাহিত্যের পর্যালোচনায় গবেষণার বিষয়ে বিদ্যমান জ্ঞানের একটি বিবরণ দেওয়া হয়। এটি গবেষণার উদ্দেশ্য ও পদ্ধতি নির্ধারণে সহায়তা করে।
- গবেষণার পদ্ধতি: গবেষণার পদ্ধতিতে গবেষণা পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলির একটি বিবরণ দেওয়া হয়।
- গবেষণার ফলাফল: গবেষণার ফলাফলে গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য ও উপাত্তের বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।
- উপসংহার: উপসংহারে গবেষণার মূল ফলাফল ও তাৎপর্য আলোচনা করা হয়।
- সূত্রপঞ্জী: সূত্রপঞ্জিতে গবেষণায় ব্যবহৃত তথ্য ও উপাত্তের উৎসগুলির উল্লেখ করা হয়।
গবেষণা প্রতিবেদন রচনার নিয়মাবলি
গবেষণা প্রতিবেদন রচনার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত নিয়মাবলি অনুসরণ করা উচিত:
- প্রতিবেদনটি অবশ্যই সুস্পষ্ট ও নির্ভুল হতে হবে।
- প্রতিবেদনটি অবশ্যই সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ হতে হবে।
- প্রতিবেদনটি অবশ্যই সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল হতে হবে।
- প্রতিবেদনটি অবশ্যই বিজ্ঞানসম্মত ভাষা ও রীতিতে লেখা হতে হবে।