অথবা, গবেষণা নশার প্রয়োজনীয়তা কী কী?
অথবা, গবেষণা নক্শার উপকারিতাগুলো কী কী?
অথবা, গবেষণা নশার উপযোগিতাগুলো কী কী?
উত্তর৷ ভূমিকা : মনোবিজ্ঞানের গবেষণায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নকশা। নকশা হচ্ছে এক ধরনের পরিকল্পনা।এ ধরনের পরিকল্পনা এমন হতে হবে যেন তা এক ধরনের কাঠামোর মতো হয়। নকশাকে কখনো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। নকশার মাধ্যমে পরীক্ষণের চলগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক নিরূপণ করা হয়ে থাকে। এরই ভিত্তিতে পরীক্ষণ পরিচালনা করে বৈজ্ঞানিক ফলাফল পাওয়া সম্ভব হয়।
গবেষণা নকশা ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা : বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা পরিচালনা করার জন্য গবেষককে কতকগুলো রীতিনীতি ও নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। এই নিয়মগুলো যথাযথভাবে পালন করতে পারলেই গবেষণাকে সার্থক মনে করা যায়। এসব নিয়ম বা প্রথার অন্যতম হলো গবেষণার নকশা তৈরি করা এবং সেই নকশা অনুযায়ী গবেষণা কর্ম পরিচালনা করা। বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনা করার জন্য নকশার গুরুত্ব অত্যধিক। তাই বিভিন্ন পরীক্ষণ পরিচালনা ও গবেষণা পরিচালনার করার জন্য নকশা প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে গবেষণা নকশা ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করা হলো :
১. গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নকশা। গবেষণার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নকশায় খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপিত হয়। তাই মনোবিজ্ঞানে নকশার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
২. নকশার মাধ্যমে গবেষণার প্রকল্প যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হয়। নকশার মাধ্যমে প্রকল্পটি খুব সহজেই বুঝা যায়।
৩. নকশার ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি নকশায় কী কী উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে এবং কী কী কৌশল অবলম্বন করা হবে তা উল্লেখ থাকে।
৪. কোন বিষয় সম্পর্কে গবেষণা করার সময় অনেক ত্রুটি দেখা যায়। এ ত্রুটিকে নকশার মাধ্যমে খুব সহজেই অনুধাবন করা যায়। তাই চল সম্পর্কে যে সমস্ত সমস্যা রয়েছে সেগুলো খুব সহজেই বুঝা যায়।
৫. গবেষণামূলক নকশাতে পরীক্ষণ সার্বিক কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত রূপ উপস্থাপিত থাকে। এই নকশা অনুযায়ী মূল পরীক্ষণ কার্যটি পরিচালিত হয়।
৬. একটি কার্যকরী ও বিজ্ঞানভিত্তিক নকশার গুরুত্ব অপরিসীম। একটি নকশা যত বেশি বিজ্ঞানসম্মত হবে গবেষণাটিও তত বেশি কার্যকরী হবে। কোন গবেষণা পরবর্তীতে পুনরাবৃত্তি করা যাবে কি না তা নকশার ধরন বিবেচনা করলেই বুঝা যাবে।
৭. গবেষণার বিষয়বস্তু হবে সুনির্দিষ্ট। কারণ নকশার মাধ্যমে বিষয়বস্তু সুনির্দিষ্ট করা হয়।
৮. গবেষণার সময়, স্থান ও স্থায়িত্ব নকশায় বিস্তারিত বর্ণিত থাকে বিধায় গবেষণা কর্মটি সম্পর্কে সহজেই সার্বিক ধারণা সম্ভব।
৯. নকশার মাধ্যমে গবেষণার চলগুলো সুনির্দিষ্ট করা হয় এবং এদের শক্তি অনুযায়ী নকশার ভারসাম্য বিবেচনা করে বিন্যস্ত করা হয়।
১০. কোন বিশেষ ধরনের গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে তা নকশায় যথাযথভাবে উল্লেখ থাকে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, যে কোন গবেষণা নকশার মাধ্যমে পরিচালনা করতে পারলে তা থেকে প্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়া সম্ভব। তবে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে নকশা অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে থাকে। বৈজ্ঞানিক
গবেষণার নকশাকে গবেষণার হৃৎপিণ্ড বলা যেতে পারে। সুতরাং নকশা ব্যতীত গবেষণার কথা কল্পনাই করা যায় না।


