গবেষণা কী?

অথবা, রিসার্স কী?
অথবা, গবেষণা কাকে বলে?
অথবা, গবেষণার সংজ্ঞা দাও।
উত্তর৷ ভূমিকা :
নির্দিষ্ট কোন বিষয় সম্পর্কে তথ্যসংগ্রহের জন্য বৈজ্ঞানিক ও সুসংঘবদ্ধ অনুসন্ধান প্রক্রিয়াকে গবেষণা বলা হয়। গবেষণা সেসব কর্মকাণ্ড, যা জ্ঞান অনুসন্ধানের আদর্শে মানসম্মত পদ্ধতির প্রয়োগ করে বিকাশলাভ করে। সামাজিক ঘটনাবলিকে সুশৃঙ্খল, যুক্তিপূর্ণ ও বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধানই সামাজিক গবেষণা। অনুসন্ধান কাজের সুবিধার জন্য সামাজিক গবেষণাকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়।
গবেষণা (Research) : সাধারণত গবেষণা তাকেই বলা যায় যেটি পর্যবেক্ষণ, অনুসন্ধান, পরীক্ষা, বিশ্লেষণ ইত্যাদির মাধ্যমে নতুন কোন তথ্য কিংবা চিন্তা মানুষের সামনে উপস্থিত করে। অন্যভাবে বলা যায়, গবেষণা একটি বুদ্ধিবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোন সমস্যাকে অনুধাবন বা শনাক্ত করা হয়। শনাক্তকৃত সমস্যাকে বিভিন্ন ছোট ছোট সমস্যায় বিভাজন করা হয়, সিদ্ধ ও প্রাসঙ্গিক উপাত্ত সংগৃহীত হয়, উপক্রমের বস্তুনিষ্ঠভাবে নিরীক্ষিত হয় এবং একটি অধিকতর সর্বজনীন সমস্যা সমাধানে পৌঁছানো যায়।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন গবেষক বিভিন্নভাবে গবেষণার সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলো :
স্কট (Scott) এর মতে, “A systematic and objective attempt to study a problem for the purpose of driving general principles.”
ওয়েবস্টার (Webster) তাঁর ‘New International Dictionary’ তে বলেছেন, “Research is careful of critical inquiry or examination in seeking facts or principles, diligent investigation in order to ascertain something.”
রিচার্ড এম. গ্রিনেল ( Richard M. Grinnell) এর মতে, “গবেষণা হলো সাধারণভাবে প্রয়োগযোগ্য নতুন জ্ঞান সৃষ্টি অথবা কোন সমাধানের লক্ষ্যে পরিচালিত কাঠামোবদ্ধ অনুসন্ধান, যেখানে স্বীকৃত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।”
রেডম্যান এবং মোরি (Redman & Morey) এর মতে, “গবেষণা হলো নতুন জ্ঞান আহরণের জন্য নিয়মতান্ত্রিক প্রচেষ্টা।” (Research is the systematized effort to gain new knowledge) রবার্ট রস (Robert Ross) বলেছেন, “গবেষণা হলো মূলত জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে অনুসন্ধান, একটি সমস্যাকেন্দ্রিক অনুসন্ধান। এ অনুসন্ধান জ্ঞান অর্জন ও সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রযোজ্য।”
D. Slesinger and Stephenson উল্লেখ করেছেন, “গবেষণা হলো জ্ঞানবর্ধন, সংশোধন বা যাচাইপূর্বক সাধারণীকরণের উদ্দেশ্যে বস্তু, প্রত্যয় বা প্রতীক নিয়ে কাজ করা, যাতে করে সে জ্ঞানতত্ত্ব কৃষ্টি অথবা কোন কৌশল অনুশীলনে সহায়তা করতে পারে।” মুরশিদ আল হাসান (Murshid Al Hasan) বলেছেন, “গবেষণা একটি বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি, যার সাহায্যে বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক তথ্য আহরণ করা যায়, তার বিচার বিশ্লেষণ করা যায় এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়।”
উপসংহার : উপর্যুক্ত সংজ্ঞার আলোকে বলা যায় যে, গবেষণা মূলত কোন বিষয়ে প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জ্ঞান লাভের প্রক্রিয়া।