ইসলামী আইনে খারাজ হচ্ছে কোন কৃষি জমির উপর ভূমি কর। কুরআন এবং হাদিস অনুযায়ী খারাজ উল্লেখ না থাকলেও ইসলামিক পন্ডিতগণের মতামত এবং ইসলামিক ঐতিহ্য অনুযায়ী তৈরি ইজমাতে এর উল্লেখ রয়েছে।
ইসলামী রাষ্ট্র যে জমি কোন অমুসলিমকে বন্দোবস্ত দিয়েছে, এমন জমিকে খারাজি জমি বলে। আর এই জমি হতে যে রাজস্ব আদায় করা হয় তাকে খারাজ বলে। খারাজ সাধারণত বছরে একবার আদায় করা হয়। এটা রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্ধারিত হয়ে থাকে। খারাজ যেহেতু জমির উপর ভিত্তি করে আরোপিত হয়, সেহেতু এটি নির্ধারণ করার পূর্বে ভূমি বিশেষজ্ঞ দ্বারা জমির গুণাগুণ পরীক্ষাপূর্বক জমির পরিমাণ নির্ধারণ করতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
খারাজের শর্তাবলী
- মুসলিম সরকার কর্তৃক খারাজ আরোপিত হতে হবে।
- প্রত্যেক ভূমির উৎপাদিত ফসলের এমন একটা অংশ খারাজ হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে, যা মোট ফসলের ১/৫ ভাগের কম থেকে শুরু করে ১/২ ভাগের বেশি না হয়। আর জমিতে ফসল উৎপাদিত না হলে খারাজ ধার্য করা যাবে না।
- উপর্যুক্ত দুটি পন্থায় জমির খারাজ ধার্য না হলে প্রত্যেক জমি পরিমাপ করে জমির গুণাগুণ অনুযায়ী ফসলের পরিমাণের প্রতি দৃষ্টি রেখে তার নির্দিষ্ট হারে ভূমিকর আদায় করতে হবে। এই করের পরিমাণ সাধারণভাবে জমির উৎপাদিত ফসলের আনুমানিক ১/৫ মূল্যের কম কিংবা ১/২ মূল্যের বেশি হবে না।
খারাজ ইসলামী রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাইতুল-মাল এ জমা হবে।
খারাজের উদ্দেশ্য
- মুসলিম রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা।
- মুসলিমদের মধ্যে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
- অমুসলিমদের মধ্যে ইসলামের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা।
খারাজের গুরুত্ব
- খারাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী আর্থিক নীতি।
- খারাজ মুসলিম রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
- খারাজ মুসলিমদের মধ্যে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে।
- খারাজ অমুসলিমদের মধ্যে ইসলামের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে।