উত্তর : বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পুঁই মাচা’ গল্পে ক্ষেন্তি পুঁইশাক খেতে ভালোবাসত। একবার অরন্ধনের আগের দিন তার মা পুঁইশাক রান্না করলে ক্ষেন্তি সেই শাকের অর্ধেকটা একা খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। রায়দের ফেলে দেয়া পাকা পুঁইশাকের ডাঁটা সংগ্রহ করে রেঁধে খাওয়ার জন্য ক্ষেন্তি বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। এর জন্য মা অন্নপূর্ণা তাকে তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনা করেছিল। পরে সেই শাকেরই কিছু অংশ রান্না হলে ক্ষেন্তি গভীর আগ্রহে তা গলাধঃকরণ করেছিল। আরও একটু দেবে কি না, মায়ের এই প্রস্তাবে ক্ষেন্তি প্রবল উৎসাহে ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানিয়েছিল। ইচ্ছামতো পুঁইশাক খাওয়ার উদ্দেশ্যে সে বাড়ির পাঁচিলের পাশে পুঁইমাচা বেঁধে পুঁইচারা লাগিয়েছিল। কিন্তু হতভাগিনী ক্ষেন্তি সেই শাক বেড়ে ওঠার আগেই অকালমৃত্যুকে বরণ করেছিল। ক্ষেন্তি খেতে খুব ভালোবাসত এবং বরাবরই বেশি পরিমাণে খেত। খাওয়ার ব্যাপারে তার কোন লাজ-লজ্জার বালাই ছিল না। পিতা সহায়হরি ও মা অন্নপূর্ণা তার এই ভোজনপটুতাকে সবসময়ই প্রশ্রয়ের দৃষ্টিতে দেখেছেন। ক্ষেন্তি পুঁইশাক ও পিঠে খেতে পছন্দ করত। বাড়িতে পুঁইশাক রান্না হলে এবং পিঠে বানানো হলে খুশিতে তার চোখ ছলছল করতো। সে একবারে আঠারো-উনিশটা পিঠে খেতে পারত । কোন প্রকার সংকোচ না করে ক্ষেন্তি মার কাছ থেকে নারকেল কোরা চেয়ে নিয়ে গোগ্রাসে গিলত।