উত্তর : হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ‘তৈল’ প্রবন্ধে তৈল দেবার কৌশল আলোচনা করতে গিয়ে উপযুক্ত পরিবেশ-পরিস্থিতিতে তৈল দেবার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রাবন্ধিক মনে করেন, যাকে আমরা স্নেহ বলি তা এক অর্থে তৈল- কেননা তৈল স্নেহজাতীয় পদার্থ। আমরা একে অপরকে
ভালোবাসি-স্নেহ করি এর অর্থও দাঁড়ায় আমরা একে অপরকে তৈলদান করে থাকি। স্নেহ ভালোবাসা মানুষকে স্নিগ্ধ করে এবং ঠাণ্ডা করে, অন্যদিকে তৈলও মানুষকে স্নিগ্ধ করে, মাথাকে ঠাণ্ডা করে। তৈল নিজে সর্বশক্তিমান বলে তার দ্বারা সহজেই চাকরি বাগানো, ওকালতি করা সহজসাধ্য হয়ে পড়ে। আর তৈলের মহিমা অপরূপ বলে জগতের কোন কাজই তৈল বিনা সিদ্ধ হয় না। তার কাছে সকল কাজই সোজা যে তৈলের ব্যবহার আয়ত্ব করেছে। তৈল যেহেতু নষ্ট হয় না- তাই তৈল দিলে কোনো না কোনো কাজ হবেই। তাই প্রাবন্ধিক মনে করেন উপযুক্ত পরিবেশে এক ফোটা তৈল দিতে পারলেই যথেষ্ট। তাই তিনি বলেছেন : “কৌশল করিয়া এক. বিন্দু দিলে যত কাজ হয়, বিনা কৌশলে কলস কলস ঢালিলেও তত কাজ হয় না।” সুতরাং বলা যায় যে, তৈল দেবার প্রবৃত্তি মানুষের স্বাভাবিক বিধায় প্রাবন্ধিক স্থান-কাল-পাত্র বুঝে তৈলের দেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।