অথবা, ঘটনা অনুখ্যান পদ্ধতি কী?
অথবা, কেস স্টাডি কী?
অথবা, কেস স্টাডির সংজ্ঞা দাও।
অথবা, কেস স্টাডি পদ্ধতি কাকে বলে।
অথবা, ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতির সংজ্ঞা দাও।
উত্তরঃ ভূমিকা : সামাজিক গবেষণায় সামাজিক সমস্যা অধ্যয়নের জন্য আর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হলো Case Study Method বা ঘটনা অনুখ্যান পদ্ধতি। এর দ্বারা সমাজ গবেষকগণ কোন সামাজিক পরিস্থিতি, সমষ্টি ও ব্যক্তিকে যাচাই করে থাকেন। এ পদ্ধতিতে এক বা একাধিক ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে একটি সাধারণ সূত্রে আসার চেষ্টা করা হয়।
কেস স্টাডি পদ্ধতি : পারিবারিক বাজেট নিয়ে স্টাডি করতে গিয়ে সামাজিক গবেষণায় এ পদ্ধতিটির প্রথম প্রয়োগ করেন ফ্রেডরিক লে প্লে (Fredric Le Play, 1806-1882)। এরপর হার্বার্ট স্পেন্সার (Herbert Spencer)
এখনোগ্রাফিক স্টাডি করতে গিয়ে পদ্ধতিটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে বার্জেস (Burgess), ড. উইলিয়াম হিলি (Dr. William Healy), মারি (H. A. Murry), রবার্ট রেডফিল্ড ও অস্কার লুইস (Robert Redfield and Oscar Lewis) এবং পি. ভি. ইয়ং (P. V. Young) প্রমুখের আলোচনা ও পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে এ পদ্ধতি একটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি
হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ পদ্ধতিতে গবেষক সাক্ষাৎকার গ্রহণ, প্রশ্নপত্র, জীবনবৃত্তান্ত কৌশলগুলো ব্যবহার করে থাকেন। গবেষক যখন কোন বিষয়ের গভীরে যেতে চান তখন সকলের নিকট যাওয়া সম্ভবপর হয় না বিধায় দুই একটা ঘটনাবলির মাধ্যমে সমগ্র ঘটনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন।
পলিন ডি. ইয়ং (Pauline V. Young) তাঁর ‘Scientific Social Surveys and Research’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন, কোন একটি সামাজিক একক যেমন কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সামাজিক প্রতিষ্ঠান কোন জেলা বা কোন একটি
সম্প্রদায়ের সর্বাত্মক অনুধ্যানকে Case Study বা ঘটনা অনুখ্যান পদ্ধতি বলা হয়।
চার্লস হরটন কুলি (Charles Horton Cooly) এর মতে, “Case study depends on our perception and gives us clears insight into life.” অর্থাৎ, কেস স্টাডি আমাদের প্রত্যক্ষণের উপর নির্ভর করে এবং জীবন সম্পর্কে পরিষ্কার অন্তর্দৃষ্টি দান করে।
G. R. Adams and J. D. Schavaneveldt তাঁদের ‘Understanding Research Methods’ গ্রন্থে বলেন, কেস স্টাডি একটি কিংবা স্বল্পসংখ্যক ঘটনার মধ্যে সীমাবদ্ধ, সাধারণত অনুসন্ধেয় চলকসমূহের ধরন ও পরিবেশের উপর আলোকপাত করা হয় এবং এ উপায় সর্বাত্মক ও গভীরতর অনুসন্ধানমুখী।
হ্যানস রাজ (Hans Raj) তাঁর ‘Theory and Practice in Social Research’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন, “সামাজিক
এককের জীবনধারা উদ্ঘাটন ও বিশ্লেষণের পদ্ধতি, যা কোন ব্যক্তি, পরিবার, প্রতিষ্ঠান বা কোন সম্প্রদায় হতে পারে,
তাকে কেস স্টাডি বলে।”
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উপরে কেস স্টাডি সম্পর্কে যে সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে তা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, কেস স্টাডি হলো কোন একটি সামাজিক একক সম্পর্কে সুগভীর পর্যালোচনা । কোন কোন গবেষক একে একটি স্বাধীন পদ্ধতি না বলে কেবল কৌশল হিসেবে অভিহিত করতে চান। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এর মাধ্যমে গবেষক বিস্তীর্ণ ও গভীর অভিজ্ঞতা লাভ করে। একটি বিশেষ ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধান গবেষককে প্রাপ্ত তথ্যাবলির বিন্যাস ও সাধারণীকরণে সহায়তা দান করে।