উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘একরাত্রি’ গল্পে গল্পকথক তাঁর অতীত জীবনের কথা বলেছেন। তাঁর বাল্যসঙ্গী ছিল সুরবালা। সুরবালার প্রতি অন্যদের অপেক্ষা তার দাবি ছিল বেশি। তারা একত্রে পাঠশালায় যেত, বউ বউ খেলতো। দুই পরিবার থেকেই তাদের বিয়ের ব্যাপারে সম্মতি ছিল। লেখক কলকাতায় পালিয়ে যায় এবং পড়ালেখা করে কালেক্টার সাহেবের নাজির অথবা জজ আদালতের হেডক্লার্ক হতে চান। কিন্তু একসময় গল্পকথক দেশের জন্য প্রাণবিসর্জন দিতে বা মাসীনি গারিবালডি হওয়ার আয়োজন করে। এদিকে লেখকের পিতা ও সুরবালর পিতা সুরবালার সাথে তার বিয়ের ব্যাপারে উদ্যোগ নেয় আর গল্পকথক আজীবন বিয়ে না করে স্বদেশের জন্য প্রাণবিসর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সুরবালার অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। পিতার মৃত্যুর পর লেখক নওয়াখালির ছোট শহরে এনট্রেন্স স্কুলের সেকেন্ড মাস্টারি পদপ্রাপ্ত হয়। এ এলাকার উকিল রামলোচন বাবুর স্ত্রী হলো সুরবালা গল্পকারের ছোটবেলার খেলার সাথী। একদিন গল্পকথক রামলোচন বাবুর বাড়িতে গিয়ে সুরবালাকে আবিষ্কার করে। আর তখন তার স্মৃতিতে ভেসে উঠে অতীতের নানা স্মৃতি যা সুরবালার সাথে জড়িয়ে আছে। তিনি গভীর বেদনা অনুভব করলেন এবং তার কাছে ভীষণভাবে মনে হলো কে যেন তার হৃৎপিণ্ডটাকে গভীর মুষ্টির চাপ দিয়ে ধরে আছে। বাসায় ফিরে গিয়েও সেই ব্যথা রইল এবং তখন তার কাছে মনে হচ্ছে একসময় যাকে হাত বাড়ালেই পেত এখন মাথা খুঁড়ে মরলেও তাকে একবার দেখার অধিকার পাবে না। শুধু গোটা দুয়েক মন্ত্রের দ্বারা সুরবালাকে তার নিকট থেকে রামলোচন বাবু চিরতরে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।