কেন এমন হয়েছে তা ভাবতে গিয়ে হয়ত বলতে পারা যায়, তাঁরা দেশের ইতিহাসকে একটুও খাতির করতে চাননি পবননন্দনের মত আস্তো ইয়োরোপ গন্ধমাদন এদেশে বসিয়ে দিতে তাঁরা প্রয়াস পেয়েছিলেন।— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : উদ্ধৃত অংশটুকু অসাম্প্রদায়িক চেতনার যাদু ও মননশীল ভাবনায় আত্মসমর্পিত প্রাবন্ধিক কাজী আবদুল ওদুদের ‘বাংলার জাগরণ’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত হয়েছে।
প্রসঙ্গ : ডিরোজিওর অনুসারীদের চিন্তাচেতনা সমাজে প্রতিষ্ঠিত না হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে আলোচ্য অংশে লেখক তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছেন।
বিশ্লেষণ : ডিরোজিওর আধুনিক এবং মুক্ত জ্ঞানচর্চার প্রভাবে তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্ম এবং সমাজ সংস্কারের উদ্দীপনা জাগে। এঁরা হিন্দু সমাজের আচারবিচার বিধিনিষেধ ইত্যাদির লংঘন দ্বারা সুনাম বা কুনাম অর্জন করে সমস্ত সমাজের ভিতরে একটা নব নব মনোভাবের প্রবর্তনা করেন। সমাজের সংস্কার আন্দোলনে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু এত গুণ ও কার্যকারিতা সত্ত্বেও স্বীকার করতে হয় ডিরোজিওর এই দল দুই এক পুরুষের বেশি প্রাণধারণ করে থাকতে পারেনি। এর কারণ হিসেবে বলা যায় তাঁরা দেশের ইতিহাসকে একটুও খাতির করেত চাননি। দেশের মানুষের মনমানসিকতার তোয়াক্কা না করেই তাঁরা পাশ্চাত্য সভ্যতার সবকিছু চাপিয়ে দিতে চেয়েছেন জনগণের উপর। পরিবর্তনের জন্য যে সময়টুকু প্রয়োজন তার তোয়াক্কা তারা করেননি। পশ্চাৎপদ অনগ্রসর মধ্যযুগীয় মানসিকতায় আচ্ছন্ন সমাজ তাঁদের এ দ্রুতগতির পরিবর্তনকে কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। তাই ডিরোজিও এবং তাঁর দলের মতবাদ সমাজে পুরোপুরি বাস্তবায়ন হতে পারেনি।
মন্তব্য : ডিরোজিও এবং তাঁর দলের অতি ভাবন্মোত্ততা সমাজে তাদের টিকে না থাকার মূল কারণ।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a6%b0%e0%a6%a3-%e0%a6%aa%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%80-%e0%a6%86/