উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বিরচিত ‘নয়নচারা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা
প্রসঙ্গ : এখানে শহরের নিষ্ঠুর প্রকৃতি সম্পর্কে আমুর উপলব্ধির কথা ব্যক্ত করা হয়েছে।
বিশ্লেষণ : ময়ূরাক্ষী নদীতীরের নয়নচারা গ্রামের মানুষ আমু দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের সাথে শহরে এসে আস্তানা গেড়েছে। ওদের সবই ছিল, এখন কিছুই নেই। সারাদিন ওরা শহরের রাস্তায় রাস্তায়, অলিতে-গলিতে, মানুষের দরজায় দরজায় একমুঠো খাদ্যের জন্য ঘুরে বেড়ায়। কেউ ওদের দিকে ফিরে তাকাতে চায় না। ফলে প্রচণ্ড ক্ষুধা পেটে নিয়ে আমু রাতের বেলা ফুটপাতে শুয়ে শুয়ে খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। সে ভরা-চোখে তাকায় আকাশের দিকে, তারাদের পানে। অকস্মাৎ আমু অবাক হয়ে ভাবে, এ তারাগুলোই কি সে নয়নচারা গ্রামে বসে দেখত। নয়নচারার আকাশে যে তারা, তার নিচে ছিল ঢালা মাঠ, ভাঙা মাটি, ঘাস- শস্য আর ময়ূরাক্ষী নদী! আর এখানকার তারাগুলোর নিচে খাদ্য নেই, দয়ামায়া নেই, ঘাস নেই, শস্য নেই, রয়েছে শুধু হিংসা- বিদ্বেষ-নিষ্ঠুরতা আর অসহ্য শত্রুতা। এখানকার ইট, কাঠ, পাথরের স্তূপের মধ্যে মানুষের মনের সুষমা চাপা পড়ে গেছে।
মন্তব্য : কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে আমু শহর ও গ্রামের প্রভেদটা বুঝতে পেরে বিস্মিত হয়েছে।