অথবা, কার্টেলের সীমাবদ্ধতা কি?
উত্তর: কার্টেলের স্থায়িত্ব তুলনামূলকভাবে খুবই কম। বিভিন্ন কারণে কাটেল ও কার্টেলের ব্যয় চুক্তি ভঙ্গ হতে পারে। নিম্নে কার্টেল ভেঙ্গে যাওয়ার কারণসমূহ উল্লেখ করা হলো-
১. কম মূল্য ধার্য: কার্টেলের অর্ন্তভূক্ত ফার্মগুলোর অনেক সময় কার্টেল মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে পণ্য বিক্রয় করে। এতে অন্যান্য ফার্মের বিক্রয়ের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং এক পর্যায়ে কার্টেল ভেঙ্গে পড়ে।
২. সঠিক চাহিদা নিরূণনে ব্যর্থতা: কার্টেল ভেঙ্গে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো সদস্য ফার্মগুলোর সঠিক চাহিদা নিরূপনে ব্যর্থতা। অনেক সময় কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক বোর্ড ফার্মসমূহের চাহিদা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারে না।
এর ফলে কার্টেল পরিচালনায় বিশৃংঙ্খলা দেখা যায় এবং তা সহজেই ভেঙ্গে পড়ে।
৩. দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা: কার্টেলের অন্তর্ভূক্ত ফার্মগুলোর মধ্যে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার দিক থেকে যথেষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। কোন কোন ফার্ম অধিক দক্ষ ও অভিজ্ঞ বলে কার্টেল মূল্য অনুসরণ করতে আগ্রহী হয় না এবং স্বাধীন মূল্য নীতি গ্রহণ করে। এমতাবস্থায় কার্টেলের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়।
৪. শিল্পে নতুন ফার্মের প্রবেশ: অনেক সময় কার্টেলে নতুন ফার্ম প্রবেশ করে। কিন্তু এসব ফার্ম প্রায়ই কার্টেল মূল্য মেনে নিতে রাজি হয় না। এমতাবস্থায় উৎপাদনের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা সম্ভব না হলে কার্টেল অস্থিতিশীল হতে বাধ্য।
৫. কেন্দ্রীয় সংস্থার পক্ষপাতিত্বঃ কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক বোর্ড অনেক সময় বিভিন্ন সদস্য ফার্মের মধ্যে কোটা বন্টন, মুনাফা বন্টন, দ্রব্যের দাম নির্ধারণ ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব করে। এর ফলে ক্ষুদ্ধ সদস্যরা ভার্টেল ত্যাগ করে।
৬. সদস্য ফার্মের কারচুপি কার্টেল ভেঙ্গে যাওয়ার আর একটি কারণ হলো সদস্য ফার্মসমূহের কারচুপি। সদস্য জার্মসমূহ বিক্রয় বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে অনেক সময় চুক্তি ভঙ্গ করে গোপনে সমঝোতামূলক দামের চেয়ে কম দামে দ্রব্য বিক্রি করে। এতে বিভিন্ন ফার্মের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা নষ্ট হয় এবং কার্টেল ভেঙ্গে যায়।
৭. সরকারি হস্তক্ষেপ: কার্টেল মূল্য উচ্চ হলে জনগণের মাঝে অসন্তুষ্টি দেখা দেয়। এমতাবস্থায় জনস্বার্থ হংরক্ষণের জন্য সরকার অলিগোপলি বাজারে হস্তক্ষেপ করে। ফলে কার্টেলের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হয়।
পরিশেষে বলা যায়, উপরিউক্ত বিভিন্ন কারণে কার্টেল ভেঙ্গে যেতে পারে।