উত্তরঃ করের কানুন হলো আইনের সেই শাখা যা কর নীতি, কর প্রশাসন এবং করদাতাদের অধিকার ও দায়িত্ব নির্ধারণ করে। কর ব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনা এবং রাষ্ট্রের আয়ের উৎস নিশ্চিত করার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশের কর ব্যবস্থা: বাংলাদেশের কর ব্যবস্থা প্রত্যক্ষ কর এবং পরোক্ষ কর – এই দুই ভাগে বিভক্ত।
প্রত্যক্ষ কর:
আয়কর: ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের আয়ের উপর ধার্য করা কর।
মূলধন লাভকর: সম্পত্তি বিক্রয় থেকে অর্জিত লাভের উপর ধার্য করা কর।
সম্পত্তির কর: ভবন, জমি, ও অন্যান্য সম্পত্তির মূল্যের উপর ধার্য করা কর।
পরোক্ষ কর:
মূল্য সংযোজন কর (VAT): পণ্য ও সেবার বাজারমূল্যের উপর ধার্য করা কর।
সীমা শুল্ক: আমদানিকৃত পণ্যের উপর ধার্য করা কর।
আবগারি শুল্ক: নির্দিষ্ট কিছু পণ্য (যেমন, তামাক, মদ্য) এর উপর ধার্য করা কর।
করের কানুনের গুরুত্ব:
রাষ্ট্রের আয়ের উৎস: কর রাষ্ট্রের আয়ের প্রধান উৎস। কর আয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্র বিভিন্ন জনসেবা প্রদান ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।
সম্পদের পুনর্বন্টন: করের মাধ্যমে ধনীদের কাছ থেকে আয় আদায় করে দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করা সম্ভব।
অর্থনৈতিক নীতি: কর নীতি ব্যবহার করে রাষ্ট্র অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে পারে।
করদাতাদের অধিকার ও দায়িত্ব:
সঠিক তথ্য প্রদান: করদাতাদের আয় ও সম্পদের সঠিক তথ্য কর কর্তৃপক্ষের কাছে প্রদান করার দায়িত্ব রয়েছে।
সময়মত কর প্রদান: করদাতাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর প্রদান করতে হবে।
হিসাব সংরক্ষণ: করদাতাদের আয় ও সম্পদের হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে।
আইন মেনে চলা: করদাতাদের কর আইনের সকল বিধান মেনে চলতে হবে।
কর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি: কর ব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য করদাতাদের মধ্যে কর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। কর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা যেতে পারে। এছাড়াও, গণমাধ্যমের মাধ্যমে কর বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা চালানো যেতে পারে।
উপসংহার: কর ব্যবস্থা রাষ্ট্রের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করে কর ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করা সম্ভব।