উত্তর : বাংলাদেশের প্রধান কবি শামসুর রাহমান ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নাগরিক কবি হিসেবে খ্যাত। যুগের অন্যতম পথিকৃৎ এ আধুনিক কবি তাঁর কাব্যে আধুনিক নগরজীবনের দাবদাহ, ক্লেদ, ক্লান্তি ও হতাশা ধারণ করেছেন। ঢাকা মহানগরীর মানুষের দুঃখ ও বিক্ষোভ, হতাশা ও হুঙ্কার, সামরিক পশ্চাদপসরণ ও নিরন্তর সংগ্রাম তাঁর কাব্যে স্থান পেয়েছে। পাশাপাশি তাঁর কাব্যে এসেছে বাংলাদেশের মানুষ এবং তার প্রকৃতির মমতা বিজড়িত রূপ। আধুনিক শব্দ ও অলঙ্কারের সন্নিবেশে তাঁর কাব্যভাণ্ডার সমৃদ্ধ। ব্যক্তিগত জীবনে কবি শামসুর রাহমান দৈনিক বাংলার’ প্রধান সম্পাদক ছিলেন। যুগের অগ্রদূত এই কবির প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে (১৯৫৯), রৌদ্র করোটিতে (১৯৬৩), বিধ্বস্ত নীলিমা (১৯৭৩), নিরালোকে দিব্যরথ (১৯৭৫), নিজ বাসভূমে (১৯৭১), ফিরিয়ে নাও ঘাতক কাঁটা (১৯৭৪), আদিগন্ত নগ্ন পদধ্বনি (১৯৭৪), বন্দিশিবির থেকে (১৯৭৫), দুঃসময়ের মুখোমুখি (১৯৭৫), আমি অনাহারী (১৯৭৫), এক ধরনের অহংকার (১৯৭৭), বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখে (১৯৭৭) প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর শ্রেষ্ঠ কবিতার একটি সংকলনও প্রকাশিত হয়েছে। ছড়া রচনার ক্ষেত্রে শামসুর রাহমান কৃতিত্বের পরিচয় রেখেছেন। সাহিত্য সাধনার স্বীকৃতি হিসেবে এ জননন্দিত কবি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক, মিৎসুবিশি পুরস্কার প্রভৃতিতে ভূষিত হয়েছে। ‘উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’ এবং ‘বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়’ নামক সাম্প্রতিক প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ দুটি বিশেষ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কবি ২০০৬, ১৭ আগস্ট ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেছেন।