অথবা, ওয়ার্ল্ড ভিশন এর গঠন কাঠামো বর্ণনা কর।
উত্তর।৷ ভূমিকা : বাংলাদেশে যেসব আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কর্মরত আছে তার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সংস্থা হলো ওয়ার্ল্ড ভিশন। ১৯৫০ সালে অনাথ শিশুদের পরিচর্যার মধ্য দিয়ে World Vision তার কার্যক্রম শুরু করে।আমাদের দেশে World Vision তার কার্যক্রম শুরু করে ১৯৭০ সালে। উপকূলীয় অঞ্চলে ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত দের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে World Vision বাংলাদেশের ৩৬টি এলাকাকে এর উন্নয়ন কর্মসূচির আওতাভুক্ত করেছে। বর্তমানে এ সংস্থাটি দারিদ্র্য বিমোচন, শিশুকল্যাণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন,স্যানিটেশন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ত্রাণ ও পুনর্বাসন, নারীর ক্ষমতায়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ প্রভৃতি বিষয়ে তার কর্মকাণ্ড সম্প্রসারিত করেছে।
গঠন কাঠামো : World Vision এর কার্যাবলি পরিচালনায় রয়েছে International Co-ordinating Body,The World Vision Partnership, The International Board and National Board, International Co-ordinating Body। ওয়ার্ল্ড ভিশন ১৯৭৭ সালে আন্তর্জাতিক সমন্বয় কমিটি (International co-ordinationg body) প্রতিষ্ঠা করে। এই কমিটি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের কাজগুলোর সমন্বয় করে। নীতি নির্ধারণের কাজও এই কমিটির। লন্ডন, জেনেভা, ব্যাংকক, নাইরোবি, লুসাকা, ঢাকা, সাইপ্রাস, নিউইয়র্ক, লস এঞ্জেলস ও সানজোসে এবং কোস্টারিয়ায় অফিস সংস্থার কৌশলগত কর্মসূচি প্রণয়ন করে। সংস্থার বোর্ড অব ডাইরেক্টস (আন্তর্জাতিক বোর্ড) পার্টনারশিপ ও কমিটির সদস্যদের (Council) তদারকি করে।
বাংলাদেশে ১৯৭০ সাল থেকে ওয়ার্ল্ড ভিশন কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৭০ সালে উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের পর ত্রাণ বিতরণের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৭১ সালে সংস্থাটি বাংলাদেশ থেকে ভারতে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ বিতরণ করে। ১৯৭২ সালে ওয়ার্ল্ড ভিশন বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় কার্যক্রম শুরু করে।
ওয়ার্ল্ড ভিশন পার্টনারশিপ : ওয়ার্ল্ড ভিশন পার্টনারশিপ জাতীয় অফিসগুলো তাদের নিজস্ব নিয়মে পরিচালিত হয়। এগুলো অবশ্য ওয়ার্ল্ড ভিশনের সাধারণ মূল্যবোধ ও সাধারণ মিশন ও ভিশন মেনে চলে। অংশীদারিত্বের চুক্তির ক্ষেত্রে প্রত্যেক জাতীয় অফিস সাধারণ নীতি ও মান রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে।
আন্তর্জাতিক বোর্ড : আন্তর্জাতিক বোর্ড বছরে দু’বার সভা করে। এ বোর্ড জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিয়োগ, কৌশলগত পরিকল্পনা অনুমোদন এবং আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারণ করে। আন্তর্জাতিক বোর্ডের বর্তমান (২০১১) সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন রবার্টো কস্তা ডি ওলিভিরা (Roberto Costa De Oliveira)। নির্বাহী অফিসার Kevin Jenkins, আস্ত র্জাতিক বোর্ডের সদস্য সংখ্যা ২৪ (চব্বিশ) জন। সদস্য পরিষদ প্রতি তিন বছরে একবার মিলিত হয়।
জাতীয় বোর্ড : এ বোর্ড পেশাগত ব্যবসায়ী, চার্চ এবং সমাজসেবায় নেতৃত্বদানকারীদের নিয়ে গঠিত। জাতীয় বোর্ডের পরিচালকবৃন্দ কর্তৃক ওয়ার্ল্ড ভিশনের ৯০% প্রকল্প অনুমোদন হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশে ওয়ার্ল্ড ভিশন এর কর্মকাণ্ড এলাকাভিত্তিক। ওয়ার্ল্ড ভিশন এলাকাভিত্তিক ব্যাপক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে শিশুকল্যাণ, দারিদ্র্য বিমোচন,শিক্ষার প্রসার, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষির উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকরণ, ত্রাণ বিতরণ ইত্যাদি।