উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বিরচিত ‘নয়নচারা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা
প্রসঙ্গ : শহরের দোকানে ঝুলানো পাকা কলার কাঁদি দেখে আমুর মনে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল গল্পকার এখানে তা একটি চিত্রকল্পের সাহায্যে ব্যক্ত করেছেন।
বিশ্লেষণ : দুর্ভিক্ষের করালগ্রাসে সব হারিয়ে বাঁচার আশা নিয়ে আমু অন্যান্যদের সাথে শহরে এসেছে। এখানে তারা খোলা আকাশের নিচে ফুটপাতে আশ্রয় নিয়েছে। সারাদিন আমু রাস্তায় রাস্তায়, মানুষের দরজায় দরজায় একমুঠো খাবারের জন্য ঘুরে বেড়ায়। রাতের বেলায় ক্ষুধার্ত পেটে খোলা আকাশের নিচে শুয়ে তারা দেখে। শহরে এসে অবধি সে কোন হৃদয়বান মানুষের দেখা পায়নি। দুপুরে লঙ্গরখানায় সামান্য যা আহার্য পায় তাতে পেটের ক্ষুধা না কমে আরও বেড়ে যায়। একদিন বিকেল বেলা আমু শহরের দোকানপাড়ায় যায়। একটা দোকানে কয়েক কাঁদি কলা ঝুলছিল। কলাগুলো পেকে হলুদ রঙ ধারণ করেছে। ওগুলোর দিকে তাকিয়ে আমুর দু’চোখ জুড়িয়ে যায়। তার পেটে তখন ভয়ঙ্কর ক্ষুধা। অথচ সে জানে ওই কলাগুলো তাঁর কাছে হলুদ রঙের স্বপ্ন ছাড়া কিছু নয়। ভাগ্য তাকে এমন স্তরে নিয়ে গেছে যেখানে সে সুস্বাদু খাবারকে কেবল স্বপ্ন বলেই ভাবতে পারে।
মন্তব্য: সুস্বাদু খাবার গরিব মানুষদের জন্য নয়। ওগুলো তাদের কাছে চিরদিন স্বপ্ন হয়েই থাকে। কোনদিন গরিবরা সুস্বাদু খাবার নাগালের মধ্যে পায় না।