:
প্রশ্ন৷ ‘ঐকতান’ কবিতার সারমর্ম লিখ।
উত্তর : ‘ঐকতান’ শব্দের অর্থ একই সুর। অর্থাৎ একই ধরনের বা পর্যায়ের। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘ঐকতান’ কবিতায় সর্বত্রগামী সাহিত্যচর্চা প্রত্যাশা করেছেন আগামী দিনের নবীন কবিদের কাছে। নিজে তিনি সর্বত্রগামী সাহিত্য রচনা করতে সক্ষম হননি। তার সীমাবদ্ধতার কথা তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন। বিশ্বায়ত চেতনায় বিশ্বাসী হয়েও রবীন্দ্রনাথের সাধ্য ছিল না সারা বিশ্বের সবকিছু সম্পর্কে ধারণা লাভ করে তা কাব্যে স্থান দেয়া । নিজের শ্রেণি অবস্থানের কারণে তিনি জেলে,
তাতি, কুমার, কুমাের, মজুরের সাথে সম্পর্ক গড়তে ব্যর্থ হয়েছিলেন। অথচ তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতেন, মাটির কাছাকাছি এসব সম্প্রদায়কে সাহিত্যের উপকরণ বা উপাদান করতে না পারলে সর্বত্রগামী অর্থাৎ সকলকে নিয়ে রচিত সাহিত্য সৃষ্টি সম্ভব নয়। নিজের ব্যর্থতাকে কবি নির্ধিধায় স্বীকার করে নিয়ে নিজের অপূর্ণতা ও অক্ষমতাকে প্রকাশ করেছেন। জীবনের সাথে জীবনের যােগ না হলে, আত্মার সাথে আত্মার সম্পর্ক স্থাপিত না হলে যে অসম্পূর্ণ সাহিত্য রচিত হবে তা সর্বজনগ্রাহ্য সাহিত্য নয়। তাই সাহিত্যের পূর্ণময়তার জন্য। প্রয়ােজন সকলের কথাকে সাহিত্যের উপকরণ হিসেবে গ্রহণ করা। বাংলা সাহিত্যের রমরমা এ আনন্দের আসরে কবি নিজে যা দিতে পারেননি অন্যের মধ্যে তারই সন্ধান করেছেন। তিনি মাটির কাছাকাছি সেই প্রাকৃতজনের যে কৰি তাকে বারংবার অভিবাদন জানিয়েছেন।